News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:৪৯, ২৯ আগস্ট ২০২৫

“দুয়েকটি দল নির্বাচনী রোডম্যাপ নিয়ে ধোঁয়াশা ছড়াচ্ছে”

“দুয়েকটি দল নির্বাচনী রোডম্যাপ নিয়ে ধোঁয়াশা ছড়াচ্ছে”

ছবি: সংগৃহীত

জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশে গুম প্রতিরোধে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

এসময় তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার আজীবন ক্ষমতায় থাকার লক্ষ্যে গুমের মতো ভয়াবহ সংস্কৃতি চালু করেছে।

আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষ্যে শুক্রবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে বাংলা একাডেমি ও ভিন্ন ভিন্ন স্থানে গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারভুক্ত সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৮৫০ জন গুমের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৩৫০ জন আজও ফেরত আসেননি। বিএনপি সরকারে এলে প্রথম কাজ হবে গুমের এই সংস্কৃতি বন্ধ করা। আমরা চাই, আর কোনো মা-বাবাকে ছবি হাতে নিয়ে সন্তান খুঁজতে রাস্তায় দাঁড়াতে না হয়।

তিনি আরও বলেন, আগামীতে যাতে কেউ গুম না হয়, সেজন্য যা যা করার দরকার বিএনপি তাই করবে। জনগণ যদি আমাদের ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ দেয়, গুম প্রতিরোধ ও নিশ্চিহ্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমরা সেই বাংলাদেশের জন্য সংগ্রাম করছি, যে বাংলাদেশে কোনো নাগরিককে গুমের বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামতে হবে না।

সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, বর্তমানে দুয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনী রোডম্যাপ নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। 

তিনি বলেন, কেউ রোডম্যাপকে স্বাগত না জানিয়ে ষড়যন্ত্রের কথা বলছে, আবার কেউ দাবি করছে এই রোডম্যাপে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আমি বলব— কোনো সংশয় থাকলে আসুন আলোচনা করি। কোনোভাবেই ঐক্যে ফাটল ধরানো যাবে না, আলোচনার মাধ্যমেই দোদুল্যমানতা ও সংশয় দূর করতে হবে।

আরও পড়ুন: নির্বাচন ঘিরে নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে: ফারুক

তিনি বিশ্বাস করেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারই দেশে জবাবদিহিতার সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে পারে। তাই তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

আলোচনা সভায় গুম থেকে ফেরত আসা শায়রুল ইসলাম নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, আমাকে ২০১৭ সালের মার্চে গুম করা হয়। সেই সময়ে আরও চারজনের সঙ্গে আমি ছিলাম। তাদের মধ্যে আমরা দুইজন ফেরত আসি, বাকি তিনজন এখনো ফেরেনি। আমাকে ফেরত দেওয়ার সময় একটি অস্ত্র মামলা দেওয়া হয়, সেই মামলায় ২০২৪ সালের জুনে সাজা হয়। এখনো আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। অথচ যারা আমাদের গুম করেছিল তারা আজও চাকরিতে বহাল।

বিএনপি নেতা হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর গুম হওয়া কিছু মানুষকে ফেরত পেলেও অনেককে পাইনি। সরকার ক্ষমতায় এসে আশ্বাস দিয়েছিল গুম হওয়া ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনবে কিংবা তথ্য দেবে। কিন্তু এতদিনেও কোনো পদক্ষেপ হয়নি।

মুগদা থানা শ্রমিকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ফজলুর রহমান কাজলের ছেলে সজল সভায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তিন মাস দেখা করার সুযোগ পাইনি। পরে কাশিমপুর কারাগারে খোঁজ করতে গিয়েও তাকে পাইনি। অবশেষে পুলিশ ফোন দিয়ে হাসপাতালে যেতে বলে। হাসপাতালে পৌঁছানোর এক ঘণ্টা পর বাবাকে মৃত অবস্থায় পাই। মৃত্যুর আগে তিনি জানান, তিন দিন ধরে খাবার পাননি এবং কারাগারে নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলেন।

সভায় সালাহউদ্দিন আহমদ আশ্বাস দেন, ভবিষ্যতে বিএনপি সরকারে গেলে গুমের মতো মানবাধিকারবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ করা হবে। 

তিনি বলেন, আমরা চাই, এই দেশে কোনো পরিবারকে আর প্রিয়জন হারানোর যন্ত্রণা ভোগ করতে না হয়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে হলে সবার আগে গুম সংস্কৃতি নির্মূল করতে হবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়