সময় চাইলেন বিএনপির পরামর্শকরা
ঢাকা: ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র দাখিলের সময় দুই থেকে তিনদিন বাড়িয়ে দেয়ার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে অনুরোধ জানিয়েছে বিএনপি সমর্থক সংগঠন ‘শত নাগরিক কমিটি’।
বুধবার বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠকে তারা এ অনুরোধ করেন।
এছাড়া বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অফিস খুলে দেয়ার পাশাপাশি নির্বাচনকালীন সময়ে ২০ দলীয় জোটের আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
একইসঙ্গে ছয়টি বিষয়ে সিইসির নিশ্চয়তা চেয়ে প্রশ্ন তোলেন তারা। এসব বিষয়ে সিইসি তাদের আশ্বস্ত করেছেন বলে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান অধ্যাপক এমাজউদ্দিন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিনের নেতৃত্বে শত নাগরিকের প্রতিনিধি দলে ছিলেন- অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ডা. জাফরুল্লাহ খান, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী ও কবি আবদুল হাই শিকদার। তারা সবাই বিএনপির পরামর্শক।
এমাজ উদ্দিন বলেন, “গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন করা উচিত। এটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভূষণ। এটাকে বাদ দেয়া যাবে না। আমরা চাই সবাই মিলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। প্রার্থীরা যাতে সঠিকভাবে প্রার্থীতা করতে পারে সে বিষয়ে আমরা ইসির পদক্ষেপ চেয়েছি। এজন্য মনোনয়ন দাখিলের জন্য দুই-তিনদিন সময় বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছি। সিইসি আমাদের এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “পুলিশের ভয়ে, আতঙ্কে অনেকে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আত্মেগোপনে আছে। নির্বাচনকালীন সময়ে তাদের অন্তত জামিন দেয়ার ব্যবস্থা করার জন্য আমরা অনুরোধ জানিয়েছি। তারা যেনো নির্বিঘ্নে তাদের প্রচারণা ও নির্বাচনী সমাবেশ করতে পারে। সেটা না করতে পারলে তো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।”
কোনো দলের পক্ষ থেকে এসব অনুরোধ জানানো হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা কোনো দলের প্রতিনিধিত্ব করছি না। শত নাগরিকের পক্ষ থেকে আমরা এসব অনুরোধ নিয়ে এসেছি।”
নির্বাচনে শত নাগরিক কোনো প্রার্থী দেবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য বলেন, “যদি কোনো প্রার্থী সৎ ও যোগ্য হয়, তাহলে আমরা তাদের সমর্থন দিতে পারি।”
এ সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান ড. জাফরুল্লাহ বলেন, “প্রত্যেক গণতান্ত্রিক দেশে জনগণ ছাড়া অন্য কারও দ্বারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বরখাস্ত করা হয় না। এখানেও যেনো সেটা করা হয়। অনেক সময় দেখা যায়, নির্বাচিত প্রতিনিধি বিরোধীদলের হলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বরখাস্ত করা হয়। এটা বন্ধ করতে হবে।”
নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে বিএনপির দলীয় ফোরাম সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা কোনো দলের এজেন্ডা নিয়ে আসিনি। আমরা কেবল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি নিয়ে এসেছি।”
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট বারে জয়লাভ করার পরে আমরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছি। তখন তিনি আমাদের বলেছেন, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
তাদের দাবি প্রসঙ্গে সিইসির ভূমিকা জানতে চাইলে এমাজউদ্দিন বলেন, “কোনো বিষয়ে তিনি কোনো উত্তর দেননি। তবে তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।”
এদিকে শত নাগরিকে পক্ষ থেকে সিইসির কাছে ছয়টি বিষয়ে ইসির ভূমিকা জানতে চেয়ে প্রশ্ন তোলেন। সেগুলো হচ্ছে- সিটি নির্বাচনের অংশ নিতে ইচ্ছুক অনেক প্রার্থী রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন বা গ্রেফতার এড়াতে গা ঢাকা দিয়ে আছেন। এইসব সম্ভাব্য প্রার্থীরা যাতে অন্যান্য প্রার্থীদের মতো মুক্ত অবস্থায় প্রকাশ্যে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাতে পারেন, সেজন্য ইসি কী ভূমিকা পালন করবে?
এছাড়া নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য দায়িত্বপ্রাপ্তরাও নির্বিঘ্নে চলাচল করে যাতে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন, সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থীদের বিশেষ সুবিধা দিতে অন্যান্য প্রার্থীদের প্রচারণায় যুক্ত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক অপপ্রয়াস রোধ, অস্ত্র এবং পেশীশক্তির প্রয়োগ রোধ করে নির্বাচনকে সুষ্ঠু এবং প্রচারকর্মী ও পোলিং এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে কমিশন কী কী পদক্ষেপ নেবেন।
এসব বিষয়ে কমিশন তাদের আশ্বস্ত করেছেন বলেও জানান তারা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএ/এমএম
নিউজবাংলাদেশ.কম








