তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিনে বিএনপির আড়ম্বরহীন কর্মসূচি
ফাইল ছবি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিন আজ, বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর)। ১৯৬৫ সালের এ দিনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান দলের ভেতরে–বাইরে শুভেচ্ছা ও শুভকামনার বার্তা পেলেও জন্মদিন উদযাপন এবারও হচ্ছে অত্যন্ত সংযত পরিবেশে।
গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তারেক রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি জন্মদিনে কোনো ধরনের আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান না করার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। কেক কাটা, পোস্টার–ব্যানার লাগানো, আলোচনা সভা বা উৎসবমুখর আয়োজনের পরিবর্তে দোয়া, মিলাদ ও মানবিক সহায়তার মতো কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। নির্দেশনা অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে বিএনপি।
গত মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিষয়টি ফের স্মরণ করিয়ে দেন।
তিনি বলেন, ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিএনপির সব ইউনিটের নেতাকর্মীদের উল্লিখিত দলীয় নির্দেশনাটি লঙ্ঘন না করার জন্য জোর আহ্বান জানানো হলো।
তারেক রহমানের ডাক নাম ‘পিনু’ বা ‘পিনো’। তিনি ১৯৮৮ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে বগুড়ার গাবতলী থানা বিএনপির সদস্য হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৯১ ও ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে মায়ের পাশাপাশি দেশব্যাপী প্রচারণায় সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
আরও পড়ুন: তারেক রহমানকে নিয়ে তথ্যচিত্র মুক্তি পাচ্ছে বৃহস্পতিবার
২০০২ সালে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি। ২০০৯ সালের পঞ্চম জাতীয় সম্মেলন এবং ২০১৬ সালের ষষ্ঠ সম্মেলনে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে যুক্তরাজ্য থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।
শৈশবে তারেক রহমান পড়াশোনা করেন ঢাকা সেনানিবাসের শাহীন হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন।
দলের জাতীয় প্রচারণা কৌশল কমিটির সদস্য হিসেবে তিনি মায়ের নির্বাচনী প্রচারণার সমন্বয় সাধন করেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়ার পাঁচ আসনে জয় প্রমাণ করে যে তারেক রহমান একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে ভবিষ্যতে দলের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে সক্ষম।
এক-এগারো সরকারের সময়কার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ২০০৮ সালে তিনি লন্ডনে চলে যান এবং সপরিবারে সেখানেই বসবাস করছেন। তবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তার দেশে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, আগামী মাসে ওমরাহ পালন শেষে তিনি দেশে ফিরবেন।
সিনিয়র নেতারা জানিয়েছেন, তিনি খুব শিগগির দেশে ফিরে সরাসরি নির্বাচনি প্রচারে অংশ নেবেন। তার নিরাপত্তা ও গণসংযোগ কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য বুলেটপ্রুফ গাড়ি আমদানির অনুমতিও এরই মধ্যে পেয়েছে বিএনপি।
তারেক রহমানের জন্মদিনে দলের ভেতরে আনুষ্ঠানিকতা সীমিত থাকলেও, সমর্থকদের আশা–উচ্ছ্বাস, শুভেচ্ছা–বার্তা আর ইতিবাচক প্রত্যাশায় দিনটি অন্যরকম অর্থ বহন করছে। সংযত পরিবেশে পালিত হলেও জন্মদিনকে ঘিরে বিএনপির ভেতরে–বাইরে তার নেতৃত্ব ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








