News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২২:১০, ২১ অক্টোবর ২০২৫

তোফায়েল আহমেদের শারীরিক অবস্থা উন্নতি

তোফায়েল আহমেদের শারীরিক অবস্থা উন্নতি

ফাইল ছবি

প্রায় এক মাস ধরে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের শারীরিক অবস্থায় কিছুটা উন্নতি এসেছে। 

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) তার ব্যক্তিগত সহকারী আবুল খায়ের জানিয়েছেন, আগের তুলনায় তার অবস্থা এখন অনেক ভালো।

আবুল খায়ের বলেন, লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়েছে, এখন তিনি স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেন।

ষাটের দশকের ছাত্র রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের অগ্রদূত এবং উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্বপূর্ণ নেতা তোফায়েল আহমেদ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি স্ট্রোকের কারণে হুইলচেয়ারে চলাফেরা করছেন এবং শরীরের একাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত।

তার পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, কয়েক বছর ধরে তিনি হুইলচেয়ারে চলাফেরা করছেন। স্ট্রোকের ফলে তার বাম হাত ও পা অবশ হয়ে গেছে, যার কারণে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করা সম্ভব নয়।

তোফায়েল আহমেদ ১৯৪৩ সালের ২২ অক্টোবর ভোলা জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকাবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

আরও পড়ুন: তোফায়েল আহমেদের অবস্থা ক্রিটিক্যাল, মৃত্যুর খবর ভিত্তিহীন

ষাটের দশকের উত্তাল সময়ে তোফায়েল ছিলেন ডাকসুর ভিপি এবং সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে তিনি ছাত্র সমাজের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। প্রলয়ংকর গণ আন্দোলনে পাকিস্তান সরকার বাধ্য হয়ে শেখ মুজিবুর রহমানসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সকল আসামিকে মুক্তি দেয়।

ওই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসভার আয়োজন করে। লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশে শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন তোফায়েল আহমেদ।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন তিনি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুজিব বাহিনীর অঞ্চলভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত চার প্রধানের একজন ছিলেন।

স্বাধীন বাংলাদেশের সংসদে তোফায়েল আহমেদ নয়বার নির্বাচিত হয়েছেন। সর্বশেষ তিনি ভোলা-১ আসনের এমপি ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে পরে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন। বর্তমানে তিনি দলের উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান তাকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় রাজনৈতিক সচিব হিসেবে দায়িত্ব দেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। পরে ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আবারও তিনি বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

তোফায়েল আহমেদের দীর্ঘ রাজনৈতিক অবদান ও জাতির মুক্তিসংগ্রামে অসামান্য ভূমিকা বিবেচনা করে তার শারীরিক অবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের নজর রয়েছে। চিকিৎসকরা সতর্কভাবে মনিটর করছেন এবং ধাপে ধাপে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়