জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম নির্ধারণ করবে সরকার: হাইকোর্ট
ফাইল ছবি
বাংলাদেশে তৈরি সকল জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম সরকারকেই নির্ধারণ করতে হবে বলে রায় দিয়েছেন বাংলাদেশ হাইকোর্ট।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রায় এ ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন, যা দেশের স্বাস্থ্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে।
১৯৯৩ সালে সরকার ৭৩৯টি জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করেছিল। কিন্তু ১৯৯৪ সালে একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই ক্ষমতা সীমিত করে মাত্র ১৭৭টি ওষুধের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারকে দেওয়া হয়, বাকি সব ওষুধের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের হাতে চলে যায়। এই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৮ সালে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) হাইকোর্টে রিট দায়ের করে।
আদালত রায়ে উল্লেখ করেন, জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকা উচিত, কারণ এটি জনগণের মৌলিক অধিকার ও জীবন রক্ষায় সরাসরি প্রভাব ফেলে। অতএব, ১৯৯৪ সালের বিজ্ঞপ্তি অবৈধ ঘোষণা করে ১৯৯৩ সালের গেজেট পুনর্বহাল করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের জুলাই প্রতিবেদনকে ঐতিহাসিক রিপোর্ট ঘোষণা হাইকোর্টের
আদালত স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ড্রাগ প্রশাসন, ওষুধ মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম নির্ধারণ ও গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
এই রায়ের পর মানবাধিকার সংস্থা এইচআরপিবির আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, এই রায় জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
তিনি আরও জানান, ১৭ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার একটি টাস্কফোর্স গঠন করে নতুন জীবনরক্ষাকারী ওষুধের তালিকা প্রস্তুত করার জন্য, যার মাধ্যমে সরকার দাম নির্ধারণ করবে।
এই রায়ের ফলে দেশের অধিকাংশ ওষুধের দাম নির্ধারণের এখতিয়ার উৎপাদনকারীদের পরিবর্তে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে ফিরেছে। এটি সাধারণ মানুষের জন্য ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে এবং স্বাস্থ্য খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে।
এই ঐতিহাসিক রায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে একটি নতুন যুগের সূচনা করবে, যেখানে জনগণের স্বার্থ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








