চীনের পণ্যে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
চীনের সঙ্গে বাণিজ্য উত্তেজনা আবারও চরমে উঠেছে। আগামী মাস থেকে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর বাড়তি ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নিজস্ব সামাজিকমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘চীনের অবিচারপূর্ণ বাণিজ্যনীতি ও প্রযুক্তি খাতে আক্রমণাত্মক মনোভাবের জবাব দিতে যুক্তরাষ্ট্র আর চুপ থাকবে না।’
ট্রাম্প জানান, গুরুত্বপূর্ণ কিছু সফটওয়্যার রপ্তানির ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে নিয়ন্ত্রণ আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর আগে একই প্ল্যাটফর্মে দেওয়া আরেক পোস্টে ট্রাম্প চীনের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘বিরল খনিজ রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করে চীন এখন বিশ্বকে জিম্মি করার চেষ্টা করছে। এটি এক ধরনের শত্রুতাপূর্ণ পদক্ষেপ।’
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও জানান, তিনি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক বাতিলের হুমকি দিয়েছেন, যদিও পরে যোগ করেন যে বৈঠকটি এখনো “চূড়ান্তভাবে বাতিল হয়নি।” তবে তিনি স্বীকার করেন, দুজনের মধ্যে আলোচনাটি আদৌ হবে কি না, তা অনিশ্চিত।
চীনের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে তাৎক্ষণিক দরপতন দেখা যায়। বিশেষ করে প্রযুক্তি ও গাড়ি খাতের শেয়ারমূল্যে বড় ধস নামে।
বিশ্লেষকদের মতে, চীনের বিরল খনিজ রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপের পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। এসব খনিজ গাড়ি, স্মার্টফোন ও উচ্চপ্রযুক্তি পণ্যে অপরিহার্য উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ার পর বেইজিং তাদের বিরল খনিজ রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আনে। এতে মার্কিন কোম্পানিগুলোর মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি গাড়ি নির্মাতা ফোর্ড সাময়িকভাবে তাদের উৎপাদন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি সোমবার: ট্রাম্প
একই সময়ে চীন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কোয়ালকমের বিরুদ্ধে একচেটিয়া ব্যবসার অভিযোগে তদন্ত শুরু করে, যার ফলে কোম্পানিটির আরেকটি চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়।
সম্প্রতি চীন যুক্তরাষ্ট্র-সম্পৃক্ত জাহাজ থেকে নতুন বন্দর ফি আদায়ের ঘোষণা দিয়েছে, যার আওতায় মার্কিন কোম্পানিগুলোর জাহাজও পড়বে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গত মে মাস থেকে দুই পরাশক্তির সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক ঘোষণাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে নতুন এক বাণিজ্যযুদ্ধের সূচনা হতে পারে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি








