২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ মৃত্যু, আক্রান্ত ৩১৯

ফাইল ছবি
সারা দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩১৯ জন রোগী।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গতকাল সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল ৮টা পর্যন্ত সময়ে ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ এবং একজন নারী। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এবং বাকি দুইজন চট্টগ্রাম বিভাগের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, এ নিয়ে ২০২৫ সালে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮৯ জনে।
বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, নতুন আক্রান্ত ৩১৯ জনের মধ্যে ২৩০ জনই ঢাকার বাইরে থেকে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাকিদের মধ্যে বেশিরভাগই রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে এসেছেন।
আরও পড়ুন: ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা নির্ধারণ হার্টের রিংয়ের দাম
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মোট ২২ হাজার ৩৮৪ জন ডেঙ্গু রোগী দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের অনেকেই চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরলেও, মৌসুমের মাঝপথেই মৃতের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মাসওয়ারি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডেঙ্গুতে মারা যান ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, মার্চে কোনো মৃত্যু হয়নি, এপ্রিল ও মে মাসে যথাক্রমে ৭ ও ৩ জন, আর জুনে ১৯ জন মারা যান। এর মধ্যে শুধু জুলাই মাসেই মৃত্যু হয়েছে সর্বাধিক ৪১ জনের। আগস্টের প্রথম পাঁচ দিনেই মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের, যা বিশেষজ্ঞদের মতে একটি নতুন উদ্বেগজনক প্রবণতা নির্দেশ করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলাবদ্ধতা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং এডিস মশার বিস্তার রোধে স্থানীয় পর্যায়ে পর্যাপ্ত উদ্যোগ না থাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসকে 'ক্রিটিক্যাল সিজন' ধরা হয়, কারণ এ সময়ই ডেঙ্গুর প্রকোপ সাধারণত সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে।
জনসাধারণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, বাড়ির আশপাশে জমে থাকা পানি পরিষ্কার রাখা, ফুলদানি, টব, টায়ারসহ যেকোনো জলাবদ্ধ জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার করা, মশারি ব্যবহার এবং অপ্রয়োজনে বাইরে না বের হওয়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এবং সংশ্লিষ্ট সকল স্বাস্থ্য সংস্থা পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি