৪ আগস্ট থেকে অনলাইনে রিটার্ন বাধ্যতামূলক

ফাইল ছবি
২০২৫–২৬ করবর্ষে দেশের প্রায় সব স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
রবিবার (৩ আগস্ট) এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান স্বাক্ষরিত এক বিশেষ আদেশে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
আদেশে বলা হয়েছে, আগামীকাল সোমবার (৪ আগস্ট) থেকে নতুন ব্যবস্থা কার্যকর হবে।
এনবিআরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আয়কর আইন ২০২৩-এর ধারা ৩২৮ (৪) এর ক্ষমতাবলে জারি করা এই আদেশের আওতায় নির্দিষ্ট কিছু শ্রেণির করদাতা ব্যতীত সব স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাকে www.ctaxnbf.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রিটার্ন জমা দিতে হবে। তবে যাদের জন্য অনলাইন রিটার্ন বাধ্যতামূলক নয়, তারা ইচ্ছা করলে অনলাইনেও রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
বাধ্যবাধকতার বাইরে রাখা হয়েছে চার ধরনের করদাতাকে— ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব প্রবীণ করদাতা; শারীরিকভাবে অক্ষম বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা (প্রমাণপত্র সাপেক্ষে); বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক করদাতা; এবং মৃত করদাতার পক্ষ থেকে আইনগত প্রতিনিধি। এই চার শ্রেণি ছাড়াও কেবলমাত্র বিশেষ পরিস্থিতিতে কাগজে (পেপার) রিটার্ন দাখিলের সুযোগ থাকবে।
আদেশে বলা হয়েছে, ই-রিটার্ন সিস্টেমে কারিগরি সমস্যার কারণে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ হলে করদাতাকে আগামী ৩১ অক্টোবর ২০২৫-এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে সুনির্দিষ্ট যুক্তিসহ লিখিত আবেদন করতে হবে। পরবর্তী পর্যায়ে অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারের অনুমোদনক্রমে তিনি পেপার রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: এনবিআরে ‘বিনাশৌর্য’ অভিযানে একযোগে শীর্ষ ৪৯ কর্মকর্তার বদলি
এনবিআরের চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত চিঠিতে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদফতর এবং সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের নতুন নীতিমালা সম্পর্কে অবহিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এনবিআর জানিয়েছে, কর ব্যবস্থাকে ডিজিটাল ও স্বচ্ছ করার পাশাপাশি করদাতাদের হয়রানি কমানো এবং সেবার গুণগত মান বাড়ানোই এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য।
এর আগে ২০২৪–২৫ করবর্ষে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু সরকারি কর্মকর্তা, ব্যাংক, মোবাইল অপারেটর ও বৃহৎ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্য অনলাইন রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।
এনবিআরের তথ্যমতে, সে উদ্যোগের ফলে গত অর্থবছরে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা প্রায় ১৭ লাখে পৌঁছায়, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। ইতিবাচক ফলাফলের ভিত্তিতে এবার তা সারা দেশের ব্যক্তিগত করদাতাদের জন্য প্রযোজ্য করা হলো।
কর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উদ্যোগ কর প্রশাসনের আধুনিকায়নে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলেও এর সফলতা নিশ্চিত করতে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের কারিগরি সক্ষমতা, করদাতাদের প্রশিক্ষণ এবং সহায়ক সেবা জোরদার করা প্রয়োজন।
এনবিআর জানিয়েছে, ই-রিটার্ন পোর্টাল ব্যবহারে সহায়তার জন্য কর অফিসগুলোতে হেল্পডেস্ক ও অনলাইন সাপোর্ট টিম নিয়োজিত থাকবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি