শেষ হচ্ছে এনসিপিসহ ১৪৪ দলের নিবন্ধন শর্ত পূরণের সময়

ফাইল ছবি
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)সহ মোট ১৪৪টি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন শর্ত পূরণের শেষ সময়সীমা শেষ হচ্ছে রবিবার (৩ আগস্ট) বিকেল ৫টায়।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে কোনো দলই শর্ত পূরণে উত্তীর্ণ না হওয়ায় ১৫ জুলাই ইসি কর্তৃপক্ষ দলগুলোকে ত্রুটি সংশোধনের জন্য ১৫ দিনের সময় দেয়।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ জুন পর্যন্ত নিবন্ধনের জন্য মোট ১৪৭টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে ৩টি দ্বৈত আবেদন হওয়ায় কার্যত ১৪৪টি দলকে প্রক্রিয়ায় রাখা হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ে দেখা যায়, কোনো দলেরই নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূর্ণাঙ্গভাবে মেনে চলা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে সব দলকে ত্রুটি পূরণের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়, যা আজ শেষ হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের বিধিমালা অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক রাজনৈতিক দলের জন্য বেশ কয়েকটি মূল শর্ত পূরণ বাধ্যতামূলক। এর মধ্যে রয়েছে—
- একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি গঠন।
- দেশের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি থাকা।
- অন্তত ১০০টি উপজেলা বা মেট্রোপলিটন থানায় কার্যকর কমিটি থাকা।
- প্রতিটি কমিটিতে অন্তত ২০০ জন ভোটারের লিখিত সমর্থনের প্রমাণপত্র।
- দলের কেউ পূর্বে সংসদ সদস্য থাকলে বা সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে কমপক্ষে পাঁচ শতাংশ ভোট পাওয়া।
- দলীয় গঠনতন্ত্র, রাজনৈতিক ইশতেহার (যদি থাকে), প্রতীক ও পতাকার ছবি, ব্যাংক হিসাব নম্বর, সর্বশেষ আর্থিক বিবরণীসহ প্রয়োজনীয় নথি।
আরও পড়ুন: খসড়া চূড়ান্ত, `জুলাই ঘোষণাপত্র` উপস্থাপন ৫ আগস্ট
প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে এসব শর্তের বিভিন্ন দিকেই ঘাটতি পাওয়া গেছে। অনেক দলের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের কমিটি অসম্পূর্ণ, কোথাও ভোটার সমর্থনের প্রমাণ নেই, আবার কারও নথি ও আর্থিক বিবরণী অসম্পূর্ণ।
সময়সীমা শেষ হলে ইসি দলগুলোর জমা দেওয়া তথ্য ও নথি যাচাই করবে এবং সরেজমিন তদন্ত পরিচালনা করবে। এরপর দাবি-আপত্তি জানাতে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। কোনো দল বা ব্যক্তি আপত্তি জানালে শুনানি করে তা নিষ্পত্তি করা হবে। আপত্তি না থাকলে নিবন্ধন সনদ প্রদান করা হবে। নিবন্ধন ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দল নিজ প্রতীকে প্রার্থী দিতে পারবে না।
বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫১টি। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। এ পর্যন্ত ৫৫টি দল নিবন্ধন পেলেও শর্ত পূরণে ব্যর্থতা ও আদালতের নির্দেশে ৫টি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়—জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে জামায়াত ও জাগপার নিবন্ধন ফেরানোর আদেশ এলেও ইসি কেবল জামায়াতের নিবন্ধন পুনর্বহাল করেছে।
আজকের সময়সীমা শেষে যারা প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দিতে ব্যর্থ হবে, তাদের আবেদন সরাসরি বাতিল হতে পারে। অন্যদিকে, যারা শর্ত পূরণে সক্ষম হবে, তাদের চূড়ান্ত বাছাইয়ের পরই নিবন্ধন সনদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি