ঢাকায় সমাবেশে সংগঠনের শক্তি দেখাবে ছাত্রদল

ফাইল ছবি
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে রাজধানীর শাহবাগে বৃহৎ পরিসরের ‘ছাত্র সমাবেশ’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
রবিবার (৩ আগস্ট) দুপুর নাগাদ শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে এ কর্মসূচি।
প্রথমে সমাবেশের স্থান ছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, তবে একই দিন একই স্থানে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সমাবেশের ঘোষণা দেওয়ায় তাদের অনুরোধে ছাত্রদল স্থান পরিবর্তন করে শাহবাগ নির্ধারণ করে। দলীয় বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এটি রাজনৈতিক সহাবস্থানের দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হবে।
সমাবেশ সফল করতে ছাত্রদল প্রায় ৯০টি সাংগঠনিক টিম গঠন করেছে। দেশের সব জেলা ও মহানগরের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে গত এক সপ্তাহে ধারাবাহিক বৈঠক হয়েছে।
নয়াপল্টনের ভাসানী ভবনে ঢাকা বিভাগের ‘সুপার ফাইভ’ নেতাদের পাশাপাশি সারা দেশের জেলা ও মহানগর ইউনিটের সভাপতি, আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক এবং সদস্য সচিবদের নিয়ে একাধিক মতবিনিময় সভা হয়।
ছাত্রদল নেতারা জানিয়েছেন, এবারের সমাবেশ গতানুগতিক ধারা থেকে কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে হবে এবং অংশগ্রহণকারীদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সমাবেশ সফল করতে ছাত্রদলের ৬ দফা নির্দেশনা
সংগঠনের পক্ষ থেকে জারি করা ৬টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা হলো—
- সমাবেশস্থলে কোনো ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন বা প্ল্যাকার্ড থাকবে না।
- ব্যক্তিগত শোডাউন ও মিছিল আনা যাবে না।
- কাঁটাবন মোড় থেকে আজিজ সুপার মার্কেট ও পিজি হাসপাতালের গলি হয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিকের রাস্তা অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি সেবার জন্য সম্পূর্ণ খোলা রাখতে হবে।
- সমাবেশের দিন কোনো ইউনিটের যানবাহন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না।
- সমাবেশ শেষে নির্ধারিত স্থানের চারপাশ পরিষ্কার করে শৃঙ্খলাভাবে স্থান ত্যাগ করতে হবে।
- দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখা সবার জন্য বাধ্যতামূলক।
চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদল প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচে ২০ বগির একটি বিশেষ ট্রেন ভাড়া করেছে, যাতে ১,১২৬টি আসন রয়েছে। রেলওয়ে চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা দিয়েছে ট্রেনটি নির্বিঘ্নে পরিচালনার জন্য। এছাড়া ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ ও রাজশাহী থেকেও বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান বলেন, নিয়মিত ট্রেনের সঙ্গেই অতিরিক্ত বগি যুক্ত করে নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসবেন।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, এটি স্মরণকালের অন্যতম বড় সমাবেশ হবে এবং নগরবাসীর দুর্ভোগ যাতে না হয়, তার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে।
সমাবেশ চলাকালে জনদুর্ভোগের আশঙ্কা থাকায় ছাত্রদল আগামভাবে নগরবাসীর প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ধৈর্য ও সহানুভূতি কামনা করেছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এনসিপির অনুরোধে শহীদ মিনারের স্থান ছেড়ে দেওয়া রাজনৈতিক সহাবস্থানের উদাহরণ।
সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ছাত্রনেতাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন।
নেতারা জানিয়েছেন, জুলাই আন্দোলনের আদর্শ ও শহিদদের স্মরণ, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের পুনঃপ্রতিষ্ঠা, এবং রাজনৈতিক সহনশীলতার আহ্বান থাকবে তার বক্তব্যে।
কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শুধু ছাত্রদলের ১৪২ নেতাকর্মী শহিদ হয়েছেন। এই আন্দোলন কারো একার নয়, সব মত-পথের মানুষের। আমরা সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে চাই।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি