সব অপরাধের নিউক্লিয়াস শেখ হাসিনা: তাজুল ইসলাম

ছবি: সংগৃহীত
২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
রবিবার (৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেলের সামনে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী (চিফ প্রসিকিউটর) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
বিচারপ্যানেলের অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
বিচার কার্যক্রম বাংলাদেশ টেলিভিশন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
সূচনা বক্তব্যে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা সব অপরাধের নিউক্লিয়াস। তার নেতৃত্বেই মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। জুলাই আন্দোলন দমনকালে সংঘটিত অপরাধের প্রমাণ এতটাই স্পষ্ট ও শক্তিশালী যে বিচারে বিন্দুমাত্র সন্দেহের সুযোগ থাকবে না।
এর আগে আদালতে বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, আজকের দিনটি ঐতিহাসিক। পৃথিবীর ইতিহাসে শেখ হাসিনার মতো কোনও স্বৈরাচারের জন্ম হয়নি। তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মিথ্যাবাদী স্বৈরাচার। কোনও স্বৈরাচারকে মিথ্যার ওপর পিএইচডি করতে হলে শেখ হাসিনার কাছে শিখতে হবে। পৃথিবীর সব স্বৈরশাসকের যদি কোনও সমিতি করা হয়, শেখ হাসিনা হবেন তার সভাপতি। তিনি দেশের ভবিষ্যৎ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের প্রচলিত আইনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।
আরও পড়ুন: জুলাই-আগস্ট হত্যাযজ্ঞে শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি
মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। আসাদুজ্জামান পলাতক থাকলেও আল-মামুন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। তিনি দোষ স্বীকার করে আদালতে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন এবং রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রুভার) হিসেবে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতন, নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও সাধারণ মানুষের ওপর সশস্ত্র হামলা।
২০২৪ সালের আগস্টে এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়। চলতি বছরের ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর ১ জুন অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়। গত ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে।
সূচনা বক্তব্যের পর একই দিন প্রথম প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
প্রসিকিউটর গাজী এম. এইচ. তমিম জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে আহত ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীদের আদালতে হাজির করা হচ্ছে, যা বিচার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেবে।
রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, দৃঢ় প্রমাণ, প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য ও রাজসাক্ষীর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তারা নিশ্চিত—বিচারে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি