News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৩:৪৫, ৩ আগস্ট ২০২৫

জুলাই-আগস্ট হত্যাযজ্ঞে শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি

জুলাই-আগস্ট হত্যাযজ্ঞে শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণ-আন্দোলনে সংঘটিত নির্মম হত্যাযজ্ঞের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ রবিবার (৩ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।

এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমরা ন্যায়বিচার চাই আইনি পরিকাঠামোর মধ্য দিয়ে। কোনো ব্যক্তির প্রতি ক্ষোভ নেই, অপরাধের বিরুদ্ধে এসেছি আমরা। ন্যায়বিচার হবে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বে স্বৈরশাসকের সমিতি থাকলে শেখ হাসিনা হতেন সেই কমিটির সভাপতি। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হবে যুগ সন্ধিক্ষণে ন্যায়বিচারের মানদণ্ড। 

অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ হাসিনাকে তীব্র আক্রমণ করে বলেন, হিটলারের তথ্যমন্ত্রী বেঁচে থাকলে মিথ্যার পিএইচডি করতে শেখ হাসিনার কাছে আসতেন।

মামলার অন্য আসামি সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন মানবতাবিরোধী অপরাধ স্বীকার করে বর্তমানে রাজসাক্ষী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন।

আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু রবিবার

গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে পাঁচটি গুরুতর অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রায় দেড় হাজার মানুষকে হত্যার নির্দেশ ও প্ররোচনা, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজ’।

ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, এই বিচার অতীতের হিসাব চুকানোর প্রচেষ্টা নয়, এটি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দৃঢ় পদক্ষেপ। কেউ যতই ক্ষমতাশালী হোক, আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আসামিদের অনুপস্থিতি বিচার কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করবে না।

প্রসিকিউশন পক্ষ ইতোমধ্যে অডিও রেকর্ডসহ অন্যান্য সাক্ষ্য প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করেছে। মামলায় মোট ৮১ জন সাক্ষী রয়েছেন, যার মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা ও জাতীয় দৈনিকের একজন সম্পাদক রয়েছেন।

বিচার কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। বিচারকাজের পরবর্তী ধাপে জোরদার সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে জুলাই আন্দোলনে আহত ব্যক্তিরা সাক্ষ্য দেবেন।

বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা নির্মম নিষ্ঠুরভাবে বিচার চাই না, আইনি প্রক্রিয়ায় বিচার শেষ করতে চাই। দেশের মানুষের স্বপ্নের বিচার চাই, এবং ন্যায়বিচারের মধ্য দিয়েই সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।

এ মামলার অভিযোগ এবং বিচার প্রক্রিয়া দেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে আদালত ও রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়