পটুয়াখালীতে রসালো ফল সাম্মামের সফল চাষে কৃষকদের স্বপ্ন

ছবি: সংগৃহীত
পটুয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা রাঙ্গাবালীতে মরু অঞ্চলের রসালো ফল সাম্মাম চাষে নতুন করে আশার আলো দেখছেন কৃষকেরা। বিশেষ করে চরাঞ্চলে পরিত্যক্ত জমিতে সাম্মামের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত তারা। এবার ফলন ভালো হওয়ায় ভালো দামও পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের মোল্লার চর গ্রামে ২০২১ সালে পরীক্ষামূলকভাবে সাম্মাম চাষ শুরু হয়। দেখতে অনেকটা তরমুজের মতো এই ফল চাষে মিলছে চমকপ্রদ সাফল্য। একসময় পানির নিচে থাকা যে জমিতে কোনো ফসল হতো না, আজ সেখানে সাম্মাম চাষ করে স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।
স্থানীয় চাষি মো. আলী আক্কাস মোল্লা (৫০) জানান, “আমি এই প্রথম ৩৫ শতাংশ জমিতে সাম্মাম চাষ করেছি। জমিগুলো আগে একেবারেই অনাবাদি ছিল। এখন ভালো ফলন পেয়েছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো লাভ হবে ইনশাল্লাহ।”
আরেক চাষি মো. তোফায়েল মৃধা (৪৮) বলেন, “গত বছরের তুলনায় এবার ফলন বেশ ভালো হয়েছে। বর্তমানে পাকা সাম্মাম ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা এবং কাঁচা সাম্মাম ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এতে পরিবার নিয়ে ভালোভাবে দিন কাটছে।”
তবে কৃষকেরা আক্ষেপ করে জানান, সরকারিভাবে তারা এখনো কোনো সহায়তা পাচ্ছেন না। প্রশিক্ষণ, বীজ, সার, কীটনাশক কিংবা বাজারজাতকরণে নেই কোনো দিকনির্দেশনা। কৃষি অফিস থেকেও তারা তেমন সহায়তা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যসম্মতভাবে জলাশয় থেকে মাছ আহরণ, সংরক্ষণ ও বিপননের উদ্যোগ
তাদের দাবি, সরকার সহযোগিতার হাত বাড়ালে উপকূলীয় এই চরে সাম্মাম হতে পারে অর্থনৈতিক মুক্তির নতুন দিগন্ত।
এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, “স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচার কম্পিটিটিভনেস প্রকল্পের আওতায় ২০২১ সালে প্রথমবারের মতো উপজেলায় অফ-সিজন সাম্মাম চাষ শুরু হয়। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২ হেক্টর জমিতে সাম্মামের আবাদ হয়েছে।”
তিনি বলেন, “প্রকল্পের অর্থায়নে যতটুকু সম্ভব সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ এবং উচ্চমূল্যের ফসল চাষে কৃষকদের ধারণাও দেওয়া হচ্ছে। রোগবালাই কম এবং বাজারমূল্য ভালো থাকায় সাম্মাম চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে।”
চাষিরা আশাবাদী, সরকার পাশে থাকলে উপকূলের পরিত্যক্ত চরাঞ্চলেই গড়ে উঠবে মরুর রসালো ফল সাম্মামের নতুন সম্ভাবনার চাষভূমি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি