পঞ্চগড়ে বেড়েছে শীতের তীব্রতা
ছবি: সংগৃহীত
উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত হিমেল হাওয়া ও উচ্চ আর্দ্রতার কারণে জেলার সর্বত্র শীতের উপস্থিতি স্পষ্টভাবে অনুভূত হচ্ছে।
রবিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ।
এর আগের দিন শনিবার একই সময়ে তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। দিন-রাতের তাপমাত্রার বড় পার্থক্যের কারণে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত শীতের দাপট আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের আবহাওয়াবিদ জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, হিমালয়ের কাছাকাছি অবস্থানের কারণে উত্তর দিক থেকে নেমে আসা হিমশীতল বাতাস পঞ্চগড়ে শীতকে আরও প্রকট করে তুলছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রা আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ, বোদা, আটোয়ারী এবং সদরসহ পুরো জেলায় ভোররাত থেকেই শীতল বাতাস বইছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শরীরে শীতের অনুভূতি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা বাড়ছে
গ্রামীণ এলাকায় মানুষ গরম কাপড়, চাদর এবং আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। খেটে খাওয়া মানুষের জন্য বিশেষভাবে সকালে বাইরে বের হওয়া অনেক সময় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
শীতের তীব্রতা বাড়ায় শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে রোগীর চাপও চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে কফ, সর্দি ও শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাত থেকে সকাল পর্যন্ত রাস্তা-মহাসড়কগুলো কুয়াশায় ঢেকে যায়। গাড়ি চালকদের হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। হালকা কুয়াশা এবং আর্দ্রতার কারণে দৃশ্যমানতা কম থাকলেও শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে।
তাপমাত্রার ওঠানামার ফলে দিন-রাতের তাপমাত্রার ফারাকও বাড়ছে। এতে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত শীত আরও প্রকটভাবে অনুভূত হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদ জিতেন্দ্রনাথ রায় আরও জানান, ডিসেম্বরের শুরুতে উত্তরাঞ্চলে শীত পুরোপুরি জেঁকে বসবে। তিনি স্থানীয়দের পরামর্শ দিয়েছেন, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য পর্যাপ্ত গরম কাপড় ও অন্যান্য ব্যবস্থা রাখা জরুরি।
উত্তরাঞ্চলের শীতের প্রকোপের সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকেও সতর্ক থাকতে হবে। গ্রামীণ অঞ্চলে শীতজনিত রোগ নিয়ন্ত্রণ, গরম পানি ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এখন সময়োপযোগী।
শীত বাড়ার কারণে জেলার দৈনন্দিন জীবনেও প্রভাব পড়েছে। স্কুল, কলেজ ও অফিসে ভোরে উপস্থিতি কমছে, মানুষকে কাজে বের হতে দেরি হচ্ছে। এতে সাধারণ জনজীবনও অসুবিধায় পড়েছে।
এই মুহূর্তে পঞ্চগড়ে শীতের প্রকোপ এবং হিমেল বাতাসের সঙ্গে কুয়াশার প্রভাবে দৃষ্টিভঙ্গি ও চলাচলকে প্রভাবিত করছে।
স্থানীয়রা বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রোদের দেখা মেলে, কিন্তু আর্দ্রতা ও হিমেল বাতাস শরীরে শীতের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








