ভূমিকম্প আতঙ্কে ঢাবি বন্ধ, শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ
ছবি: সংগৃহীত
গত দুই দিনের ভূমিকম্প ও কম্পনের পর তৈরি জরুরি পরিস্থিতিতে আগামী ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (২২ নভেম্বর) রাতে এক জরুরি সিন্ডিকেট বৈঠকের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
একই সঙ্গে সব ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত এবং আবাসিক হলগুলো রবিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল ৫টার মধ্যে খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নিয়াজ আহমেদ খান সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই জরুরি বৈঠকে শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, জরাজীর্ণ হলগুলোতে ব্যাপক ফাটল এবং নির্মাণগত ঝুঁকি থাকায় শিক্ষার্থীদের অস্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা অপরিহার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব প্রকৌশল বিভাগের পরামর্শ ও বুয়েটের বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
রবিবার সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে হল ত্যাগ শুরু করেছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। একদিকে অনেক শিক্ষার্থী প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, আমাদের হলে কিছু স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। বন্ধ থাকার সময় মেরামত করা হলে আমরা নিরাপদে ফিরে আসতে পারব।
আরও পড়ুন: ফাঁসির রায় উদযাপনে মিলাদ মাহফিল থেকে আলিয়া মাদরাসায় সংঘর্ষ
অন্যদিকে কিছু শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, এমন বাধ্যতামূলক হল ত্যাগ শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকটের স্থায়ী সমাধান নয়।
তারা বলছেন, সময়সীমা খুবই সংকুচিত, এবং অল্প দিনের মধ্যে হল খালি করার নির্দেশ শিক্ষার্থীদের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।
এই বাস্তবতায় কিছু আবাসিক শিক্ষার্থী ভিসির বাসভবনের সামনে রাতভর অবস্থান করেছেন।
তাদের দাবি হলো নিরাপদ আবাসনের দৃশ্যমান সমাধান, হোল্ডিং ভবনগুলোর পূর্ণ পরিদর্শন ও মেরামত, এবং ভবন ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা। তারা প্রশাসনের কাছ থেকে স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি চান যাতে ভবিষ্যতে এমন ঝুঁকি এড়ানো যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করার পর দ্রুত মেরামত করা হবে এবং পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয় চালু করার পূর্বে শিক্ষার্থীরা নিরাপদভাবে ফিরে আসতে পারবেন। প্রশাসন আশা করছে, দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন হবে এবং পুনরায় হোস্টেলগুলো চালু করা সম্ভব হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পদক্ষেপ ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও জরাজীর্ণ হোস্টেলের সমস্যাকে অস্থায়ীভাবে মোকাবিলা করার উদ্যোগ। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী সমাধান নয়। ভবিষ্যতে পূর্ণ মেরামত, নির্মাণ মান নিয়ন্ত্রণ এবং শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ অপরিহার্য হবে।
ঢাবি প্রশাসনের এই পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় গুরুত্বপূর্ণ হলেও, আবাসিক সমস্যা ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ এখনও অব্যাহত রয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








