‘জুলাই পুনর্জাগরণে’ হেলিকপ্টার সদৃশ বেলুনে আগুন, আহত ৬

ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে আয়োজিত 'জুলাই পুনর্জাগরণ' অনুষ্ঠানে প্রতীকী ‘হেলিকপ্টার সদৃশ’ বেলুন উড়ানোর সময় আগুন লেগে ৬ জন দর্শনার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে অ্যাম্বুলেন্সে করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক নয় বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুর ২টার কিছু পরে, যখন মঞ্চ থেকে ঘোষণার মাধ্যমে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের মুহূর্তটি প্রতীকীভাবে পুনরায় উপস্থাপন করা হচ্ছিল। সে সময় আকাশে ওড়ানো হয় একটি হেলিকপ্টার-সদৃশ বেলুন, যা কিছুক্ষণের মধ্যেই অগ্নিদগ্ধ হয়। গ্যাসচালিত এই বেলুনে আকস্মিক আগুন লেগে কাছাকাছি থাকা ছয়জন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লেও দ্রুত নিভে যায়।
আহতদের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি, তবে আয়োজকদের তরফে জানানো হয়, ঘটনাস্থলে প্রাথমিক চিকিৎসা ও তাৎক্ষণিক পরিবহনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল, ফলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়েছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেনা হেলিকপ্টারে দেশত্যাগ করেছিলেন—এমন দাবির ভিত্তিতে প্রতিবছর দিনটিকে 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস' হিসেবে পালন করে আসছেন নতুন প্রজন্মের নাগরিক আন্দোলনের কর্মীরা। সেই ঘটনার বর্ষপূর্তি স্মরণে আয়োজিত হয় ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ নামের এ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। এবারের আয়োজনেও সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো মানুষ সমবেত হন মানিক মিয়া এভিনিউতে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ঐতিহাসিক দিনে হাসিনার ‘পলায়নের দৃশ্য’ নিয়ে ভার্চুয়াল গেম
আয়োজন ঘিরে পুরো মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, আনসার ও গোয়েন্দা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিটি প্রবেশপথে দর্শনার্থীদের দেহ তল্লাশি ও ব্যাগ স্ক্যানের ব্যবস্থা ছিল। আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৃষ্টির সম্ভাবনা মাথায় রেখে বিকল্প সাউন্ড সিস্টেম, প্লাস্টিক কাভার ও নিরাপত্তা শামিয়ানা প্রস্তুত রাখা হয়েছিল।
তবে এতসব প্রস্তুতির মাঝেও প্রতীকী বেলুনে আগুন লাগার মতো ঘটনা প্রশ্ন তুলেছে প্রযুক্তিগত প্রস্তুতির ঘাটতি ও নিরাপত্তা যাচাইয়ের যথাযথতার বিষয়ে।
যদিও আয়োজকরা দাবি করেছেন, এটি একটি বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনা এবং ভবিষ্যতে এমন প্রতীকী প্রদর্শনী আরও সাবধানতার সঙ্গে পরিচালনা করা হবে।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজারো মানুষকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। কেউ ছাতা নিয়ে, কেউ ভিজে দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান উপভোগ করছিলেন।
‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ মূলত একটি ঐতিহাসিক স্মরণ ও রাজনৈতিক রূপান্তরের প্রতীকী অনুষ্ঠান। এ ধরনের আয়োজনে জনসম্পৃক্ততা যেমন আশাব্যঞ্জক, তেমনি সামান্য ভুলও বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। তাই ভবিষ্যতের এ ধরনের উদযাপনে প্রতীকী উপস্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ঝুঁকিমূল্যায়ন আরও কঠোরভাবে নিশ্চিত করা প্রয়োজন—যাতে আন্দোলনের শক্তি ও স্মরণ একইসঙ্গে বেগবান হয়, কিন্তু বিপজ্জনক না হয়।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি