News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:১২, ২৭ আগস্ট ২০২৫

বেসরকারি খাতে যাচ্ছে ‘নগদ’, বিনিয়োগকারী খুঁজছে সরকার

বেসরকারি খাতে যাচ্ছে ‘নগদ’, বিনিয়োগকারী খুঁজছে সরকার

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের মোবাইল আর্থিক সেবা (MFS) খাতে প্রতিযোগিতা ও নতুন বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে ডাক বিভাগের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ‘নগদ’-কে বেসরকারি খাতে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। 

প্রতিষ্ঠানটির জন্য বিনিয়োগকারী খুঁজতে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে- বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

বুধবার (২৭ আগস্ট) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আইসিএমএবি ও মাস্টারকার্ডের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ সামিট ২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

গভর্নর জানান, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ‘নগদ’-কে দেশের এমএফএস খাতে বিকাশ-এর মতো একটি যোগ্য ও শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মতে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মূল কারণ হলো দেশের এমএফএস খাতে ’একক বড় প্রতিষ্ঠানের‘ আধিপত্য কমানো এবং সুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি করা। বর্তমানে, ডাক বিভাগের পক্ষে ‘নগদ’-এর মতো একটি প্রযুক্তি-নির্ভর আর্থিক সেবা সঠিকভাবে পরিচালনা করার মতো সক্ষমতা নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করে ‘নগদ’-কে আরও শক্তিশালী ও স্থিতিশীল প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হবে।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী নয়, গর্ভনর ও ডেপুটি গর্ভনরকে নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি

গভর্নর বলেন, প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের জন্য এমন একটি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন, যারা বিকাশের মতো ধাপে ধাপে, শেয়ার ধরে ধরে নগদে বিনিয়োগ করতে পারবে। আমরা আশা করছি, এই উদ্যোগের ফলে নগদকে যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব হবে।

সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ‘নগদ’-এ কিছু বড় ধরনের সংশোধন আনা হয়েছে। 

গভর্নর জানান, আগের মালিকদের কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন অনিয়ম ও ‘EOC’ (Electronic Money Order) সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধান করা হয়েছে। প্রায় দেড় কোটি ভুয়া বা অকার্যকর হিসাব চিহ্নিত করে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি পুনর্গঠনের পথে রয়েছে।

২০১৯ সালের ২৬ মার্চ যাত্রা শুরু করা ‘নগদ’ বিগত সরকারের সময়ে নানা অনিয়মের অভিযোগে সমালোচিত হয়েছিল। এক পর্যায়ে, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক মামলাও দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে, আদালত কর্তৃক প্রশাসক বসানো অবৈধ ঘোষিত হলে এর দায়িত্ব পুনরায় ডাক অধিদপ্তর গ্রহণ করে। এই প্রেক্ষাপটে, নতুন সরকার 'নগদ'-কে সম্পূর্ণ বেসরকারি খাতে হস্তান্তরের মাধ্যমে এর অতীত সমস্যাগুলো থেকে মুক্ত করে একটি স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করতে চায়।

গভর্নর আরও জানান, ‘নগদ’-এর মালিকানা আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে নতুন বিনিয়োগকারী খুঁজে বের করা হবে, যাদের হাতে 'নগদ' পরিচালনার সক্ষমতা ও প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত দক্ষতা থাকবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান এবং অর্থ সচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন, যা সরকারের এই সিদ্ধান্তের গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়