News Bangladesh

সখিপুর সংবাদদাতা || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৪:৪৯, ১১ নভেম্বর ২০২৫

আ. লীগ ভোট দিতে না পারলে নির্বাচনে যাবো না: কাদের সিদ্দিকী

আ. লীগ ভোট দিতে না পারলে নির্বাচনে যাবো না: কাদের সিদ্দিকী

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের ভোটার, জাতীয় পার্টির ভোটাররা যদি ভোট দিতে না পারে তাহলে গামছা (দলের প্রতীক) নিয়ে নির্বাচন করতে যাবেন না বলে জানিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বী‌র উত্তম।

সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বহেড়াতৈল গণউচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা জনগণের অধিকার চাই, ভোটাধিকার চাই। যখন সবাই পাকিস্তান চেয়েছিল, তখন জামায়াত ছিল ব্রিটিশদের দোসর। আর যখন আমরা সবাই স্বাধীন বাংলাদেশ চেয়েছি, তখন এই জামায়াত পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়ে খুনখারাবি করেছে। সেই জামায়াতকে নিয়ে কেউ যদি নির্বাচন করে, আমি সেই নির্বাচনে অংশ নেব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখনও হিসাব করলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের ভোট ৪৩ শতাংশ, জাতীয় পার্টির ১৪ শতাংশ, আমাদের তিন শতাংশের মতো। অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের বৈঠকে আমাদের ডাকা হয়নি। এখন ডাকলে যাব কেন?’

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে বঙ্গবীর বলেন, ‘ইউনূস সাহেব, আমি আপনাকে অনেক সম্মান করতাম। শেখ হাসিনা যখন আপনাকে সুদখোর বলেছিলেন, তখন আমি আপনার পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। আমি পাশে না দাঁড়ালে আপনার গ্রামীণ ব্যাংক আজ থাকত না। কিন্তু এখন দেখছি, আপনি বাংলার মানুষকে চেনেন না। এনজিও চালানো আর দেশ চালানো এক নয়। এখনো সময় আছে—সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একটি নিরপেক্ষ ও সন্তোষজনক নির্বাচন আয়োজন করতে পারেন। তাহলে ইতিহাসে আপনার নাম সম্মানের সঙ্গে থাকবে। না হলে, যদি মীরজাফর বা ঘসেটি বেগমের পথ বেছে নেন, তাহলে আপনার পতনও দূরে নয়।’

‘জুলাই সনদের বাইরের সিদ্ধান্তের দায় সরকারের ওপর বর্তাবে’

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ করি না। আমি বঙ্গবন্ধু করি, আমি মুক্তিযুদ্ধ করি, আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাই। আমি জয় বাংলা করি। সরকার বাহাদুরকে বলে গেলাম, জয় বাংলা বলা যদি অপরাধ হয়, তাহলে আমাকে প্রথম গ্রেপ্তার করেন। সেখানেও আমি বলব, আমি জয় বাংলা বলে মুক্তিযুদ্ধ করেছি, জয় বাংলা বলেই আমার জীবন দিয়ে যেতে চাই। আমার নেতা বঙ্গবন্ধু, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধ আমার ধ্যান, বঙ্গবন্ধু আমার চেতনা, বঙ্গবন্ধু আমার চৈতন্য।’

শেখ হাসিনার পতন প্রসঙ্গে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘বিএনপি বা জামায়াত নয়, শেখ হাসিনাকে সরিয়েছে জনগণ। মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল তার অত্যাচারে। আমি বিশ্বাস করি, শেখ হাসিনার পতন আল্লাহরই বিধান ছিল। তিনি যে পরিমাণ অবিচার করেছেন, তারই প্রতিফলন এটি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৫-১৬ বছরে শেখ হাসিনা যে পরিমাণ অর্থ আদায় করেছেন বিভিন্ন স্ট্যান্ড থেকে, বর্তমান সময়ে তার চেয়েও বেশি টাকা তোলা হচ্ছে। শেখ হাসিনার পতনের সময় ধানের শীষ ছিল এক নম্বর দল, কিন্তু এখন তারাও মানুষের বিরক্তির কারণ হয়ে উঠেছে। যে কারণে মানুষ হাসিনাকে সরিয়েছে, সেই একই পথে হাঁটলে বিএনপিরও একই পরিণতি হবে।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান। এতে বক্তব্য দেন টাঙ্গাইল জেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবু সালেক হিটলু, উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেন সজীব, কালিহাতী উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ইথার সিদ্দিকী, বাসাইলের সাবেক মেয়র রাহাত হাসান টিপু, উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা বিল্লাল হোসেন, আব্দুল্লাহ মিয়া, সহসভাপতি সানোয়ার হোসেন মাস্টার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিক জাহাঙ্গীর, আলমগীর সিদ্দিকী, আবু জাহিদ রিপন, দেলোয়ার হোসেন মাস্টার ও আঁখি আতোয়ার প্রমুখ। 

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়