News Bangladesh

স্টাফ রিপোর্টার || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৩:৫২, ১১ নভেম্বর ২০২৫

‘জুলাই সনদের বাইরের সিদ্ধান্তের দায় সরকারের ওপর বর্তাবে’

‘জুলাই সনদের বাইরের সিদ্ধান্তের দায় সরকারের ওপর বর্তাবে’

ছবি: সংগৃহীত

 বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদে উল্লেখিত বিষয়ের বাইরে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো দলের জন্য তা মানার বাধ্যবাধকতা থাকবে না। সে ক্ষেত্রে সব দায়-দায়িত্ব সরকারের ওপর বর্তাবে।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত জানান খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, 'সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে কেউ কেউ জুলাই জাতীয় সনদের বাইরে কোনো কোনো বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের ঘোষণার প্রসঙ্গে যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন, তা বিভ্রান্তিকর এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করার সামিল।'

তিনি বলেন, 'আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, জুলাই জাতীয় সনদে উল্লেখিত বিষয়ের বাইরে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো দলের জন্য তা মানার বাধ্যবাধকতা থাকবে না। সে ক্ষেত্রে সব দায়-দায়িত্ব সরকারের ওপর বর্তাবে।

এ ব্যাপারে সতর্ক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

একই কথা পুনর্ব্যক্ত করে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, 'জুলাই জাতীয় সনদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন দফায় কিছু নোট অব ডিসেন্ট আছে। সেই নোট অব ডিসেন্টগুলোর ক্ষেত্রে সনদে বলাও আছে যে, দলগুলো যদি নির্বাচন ইশতেহারে উল্লেখ করে জনগণের ম্যানডেট পায়, নোট অব ডিসেন্টগুলো তারা সেভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবে। এখানে আমরা শতভাগ একমত, এখনো আমরা সেই জায়গায় আছি এবং আমরা স্বাক্ষরিত সনদের বাইরে নাই। কিন্তু যেভাবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে সনদ বাস্তবায়নের উপায় সংক্রান্ত যে সুপারিশ প্রদান করেছে, তার মধ্যে নোট অব ডিসেন্টের অংশগুলো উল্লেখিত নেই। একদম নেই।'

আরও পড়ুন: ‘বিভিন্ন অজুহাতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে নির্বাচনবিমুখ দলগুলো’

তিনি বলেন, 'শুধু প্রস্তাবগুলোর ব্যাপারে ৪৮টি দফা দিয়ে তারা একটি তফসিল করেছে। সেই তফসিলে প্রস্তাবগুলো সম্পর্কে গণভোটের প্রস্তাব করেছে। জাতীয় ঐকমত্যের স্বার্থে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনে গণভোটের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদের ওপরে জনগণের সম্মতি নেওয়ার জন্য আমরা রাজি হয়েছিলাম, সে জায়গায় আমরা আছি।'

সাংবিধানিক আদেশ জারির ক্ষেত্রে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, 'আদেশের বিষয়ে আমরা সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব এ রকম দেইনি যে, আদেশ কে জারি করবে। আমরা একটা সাংবিধানিকতার মধ্যে আছি। সাংবিধানিকভাবে এই সরকার শপথ নিয়েছে। সব কিছু আইনানুগভাবে চলছে। এখন কোনো অধ্যাদেশ জারি করার ক্ষমতা এই সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রপতির। যদি কোনো আদেশ জারি করতে হয় সেই আদেশের মর্যাদা যদি আইনি হয়, সেই আদেশ জারি করার মতো কোনো সাংবিধানিক অবস্থা বাংলাদেশে নেই। কারণ প্রেসিডেন্ট অর্ডারটা জারি করার একটা বিধান এক সময় ছিল, যত দিন পর্যন্ত বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয়নি। আপনারা সবাই জানেন, সে রকম পিও অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট অর্ডার নিয়ে তখন রাষ্ট্র চলতো। সংবিধান গৃহীত হয়ে যাওয়ার পরে রাষ্ট্রপতির আদেশ জারির আর কোনো বিধান রইলো না, সেটা বিলুপ্ত হলো। এখন কী রকম আদেশ দেবে? সেই আদেশের মর্যাদা কি আইনি মর্যাদা হবে? সেটা এখনো সরকার নির্ধারণ করেনি। একমাত্র অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা ছাড়া রাষ্ট্রপতির অন্য কোনোভাবে আইন প্রণয়ন করার ক্ষমতা এখন নেই।'

তিনি বলেন, 'এখন যেটা করছে, রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করে কিন্তু আদেশ জারি করার কোনো বিধান বর্তমান সংবিধানে নেই। কিন্তু যদি এখন কোনো প্রজ্ঞাপনকে আদেশ নামকরণ করতে চায় এবং সেটার আইনি মর্যাদা না থাকে, সেটা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার প্রকাশ করতে পারে—আইন হবে না সেটা,' যোগ করেন তিনি।

গণভোট ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, 'সরকার যদি আলোচনার জন্য আহ্বান জানায়, সে ক্ষেত্রে আলোচনার সুযোগ থাকতে পারে। রাজপথে তো নয়!'

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়