জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করার কারণ জানাল এনসিপি

ফাইল ছবি
বহুল আলোচিত জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫-এ স্বাক্ষর না করার কারণ জানিয়েছে জুলাই যোদ্ধাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাত পৌঁনে ১১টার দিকে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ সিদ্ধান্তের কারণ উল্লেখ করেন এনসিপি নেতা সারোয়ার তুষার।
পোস্টে বলা হয়— ‘এনসিপি কেন জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি?’
এনসিপি জানায়, তারা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের টেক্সট এবং বাস্তবায়ন পদ্ধতির পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা দেখার পর সনদে স্বাক্ষর করবে। কারণ হিসেবে দলটি বলেছে, তারা জুলাই সনদকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল বা ফাঁকা প্রতিশ্রুতি মনে করে না; বরং এর মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত বাংলাদেশের স্বৈরতান্ত্রিক ভিত্তি ভেঙে গণতান্ত্রিক রূপান্তর নিশ্চিত করা।
এনসিপি মনে করে, এজন্য সনদের একটি সুস্পষ্ট আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তি থাকা আবশ্যক।
দলটি আরও জানায়, রাজনৈতিক দলগুলো এক বছর ধরে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে কাজ করে “জুলাই সনদ আদেশ > গণভোট > সংবিধান সংস্কারে ক্ষমতাপ্রাপ্ত সংসদ”—এই ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নে একমত হয়েছে।
তবে এনসিপির অভিযোগ— জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় বাস্তবায়ন পদ্ধতির স্পষ্ট উল্লেখ নেই। তাদের মতে, “বাস্তবায়ন পদ্ধতি ছাড়া সনদে স্বাক্ষর করা জনগণের সঙ্গে প্রতারণার শামিল,” কারণ অতীতে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বারবার ভঙ্গ করেছে।
আরও পড়ুন: ‘গণতান্ত্রিক উত্তরণের নতুন অধ্যায় জুলাই সনদ’
ফেসবুক পোস্টে এনসিপি আরও তিনটি শর্ত উত্থাপন করে, যা জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বলে উল্লেখ করেছে দলটি—
১. বাস্তবায়ন আদেশ ও গণভোটের প্রশ্ন চূড়ান্ত করে আগে জনগণের কাছে প্রকাশ করতে হবে।
২. বাস্তবায়ন আদেশের খসড়া জনগণের অভিপ্রায়ের প্রতিফলন হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জারি করবেন।
৩. গণভোটের মাধ্যমে জনগণ যদি জুলাই সনদে রায় দেয়, তবে ‘নোট অব ডিসেন্ট’-এর কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। গণভোটের রায় অনুযায়ী আগামী নির্বাচিত সংসদ তাদের প্রদত্ত গাঠনিক ক্ষমতা (Constituent Power) অনুযায়ী সংবিধান সংস্কার করবে। সংশোধিত সংবিধানের নাম হবে ‘বাংলাদেশ সংবিধান, ২০২৬’।
এনসিপি জানিয়েছে, এই বিষয়গুলোর নিশ্চয়তা ছাড়া সনদের সাংবিধানিক ভিত্তি নিশ্চিত হবে না বলে তারা মনে করে। তাই বাস্তবায়ন আদেশে এসব বিষয় স্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত হলেই দলটি জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে।
শেষে দলটি উল্লেখ করে— “অন্য কিছু রাজনৈতিক দল যেখানে বাহাত্তরের মুজিববাদী সংবিধানের মূলনীতি রক্ষার স্বার্থে সনদে সই করেনি, এনসিপির অবস্থান তার থেকে মৌলিকভাবে ভিন্ন।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি