কারাগারে খালেদা জিয়ার ওপর নির্যাতনের বিচার দাবি মির্জা আব্বাসের
ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে ‘চরম নির্যাতন’ করা হয়েছে, এমন অভিযোগ তুলে এর সঙ্গে জড়িতদের বিচার চেয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় আয়োজিত এক মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ দাবি জানান। খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
মির্জা আব্বাস তার বক্তব্যে বলেন, কারাগারে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চরম নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারের যে কক্ষে রাখা হয়েছিল, সেখানে ইঁদুর ও পোকামাকড় দৌড়াদৌড়ি করতো। কয়েকজন ডেপুটি জেলার অন্যায়ভাবে তাকে ছাদের ওপর একটি কক্ষে রেখেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, আজকে আমি এই অনুষ্ঠান থেকে বেগম খালেদা জিয়ার জেলজীবনে তার ওপর যে অত্যাচার হয়েছে, যে নির্যাতন হয়েছে, কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের সবার বিচার দাবি করছি। আমি মনে করি, এর বিচার হওয়া উচিত।
বিএনপির দুর্দিনে খালেদা জিয়ার ভূমিকা তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা যারা কয়েকজন তার সঙ্গে কাজ করেছি, তারা দেখেছি নানা চাপের মধ্যেও তার দৃঢ় মনোবল। গণতন্ত্রের প্রশ্নে তার আপসহীন নেতৃত্ব এবং নেতাকর্মীদের প্রতি তার যে ভালোবাসা ও স্নেহ, তা তুলনাহীন।
খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে। তার বাবা এস্কান্দর মজুমদার এবং মা বেগম তৈয়বা মজুমদার। চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ। পৈতৃক নিবাস ফেনীর ফুলগাজী হলেও শৈশব ও কৈশোর কেটেছে দিনাজপুরে বাবার কর্মস্থলে।
আরও পড়ুন: এখনও গণতন্ত্র হাতের নাগালের বাইরে: গয়েশ্বর
১৯৮১ সালের ৩০ মে স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর রাজনীতিতে সক্রিয় হন খালেদা জিয়া। প্রথমে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৪ সালে দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। তিনি তিন দফায় দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন: ১৯৯১-১৯৯৬, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এবং ২০০১-২০০৬ মেয়াদে।
২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যান খালেদা জিয়া। দীর্ঘদিন পুরোনো ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে বিনা চিকিৎসায় থাকার কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সে সময় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার সুপারিশ করলেও, তৎকালীন সরকার পরিবারের পক্ষ থেকে করা আবেদন বারবার নাকচ করে দেয়।
পরে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে তাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি গুলশানের ভাড়া বাসা 'ফিরোজা'-তে অবস্থান করছেন।
খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মসজিদ, এতিমখানা এবং মাদ্রাসায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সঞ্চালনা করেন। এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নজরুল ইসলাম খানসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, মীর সরাফত আলী সপু, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সাইফুল আলম নিরব, আসাদুল করীম শাহিন, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, যুবদলের নুরুল ইসলাম নয়ন এবং অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








