ভুয়া সিবিএ নেতাদের ফুলেল শুভেচ্ছায় নাজমা মোবারেক বিতর্কে

অননুমোদিত সিবিএ নেতা ফয়েজ আহমেদ ও মিরাজ হোসেনের উপস্থিতি এবং প্রধান অতিথি নাজমা মোবারেককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর ঘটনা সম্প্রতি সামাজিক ও পেশাগত বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা এই কর্মকাণ্ডকে অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ‘কৃষি উন্নয়নে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ভূমিকা: চ্যালেঞ্জ উত্তরণে রোডম্যাপ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, এবং উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাঈদ কুতুব।

ঘটনার মূলকেন্দ্র হলো শ্রম অধিদপ্তরের নিবন্ধিত ট্রেড ইউনিয়ন (বি-৯৮৫) দাবি করা অননুমোদিত নেতা ফয়েজ আহমেদ (সাবেক পিয়ন) ও সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন, যারা বৈধ অনুমোদন ছাড়াই নিজেদের সিবিএ নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সচিব নাজমা মোবারেককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

আরও পড়ুন: কার্গো অগ্নিকাণ্ডে ২৫০ কারখানার পণ্য ক্ষতির আশঙ্কা: বিজিএমইএ

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এই দুইজনই কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) বৈধ সভাপতি আব্দুল হালিম হত্যা মামলার আসামি, এবং বর্তমানে অস্থায়ী জামিনে মুক্ত রয়েছেন। নিহত আব্দুল হালিম চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর বাসিন্দা ও কৃষি ব্যাংকের সাবেক কর্মচারী ছিলেন। মতিঝিল থানার এসআই সজীব কুমার সিংয়ের সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের কারণে ধস্তাধস্তির পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সিবিএর সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ সংবাদকর্মীদের জানান, হালিম ভাই ২০১৪ সালে নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন এবং তিনি সাধারণ সম্পাদক। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। ৫ আগস্ট ফয়েজ ও মিরাজ নিজেদের সভাপতি-সম্পাদক ঘোষণা করে জোরপূর্বক অফিস দখল করেন।

নাসিম আরও জানান, তারা ইতিমধ্যে শ্রম আদালত ও থানায় মামলা করেছেন এবং আদালত তাদের নোটিশ জারি করেছে। তিনি দাবি করেন, হালিম ভাইকে এর আগেও হুমকি দেওয়া হয়েছিল।

নাসিমের বক্তব্য অনুযায়ী, এই অননুমোদিত কার্যকলাপের নেপথ্যে আছেন কৃষি ব্যাংকের এইচআরএমডি বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন, ডিজিএম লিয়াকত আলী এবং পর্ষদ সচিবালয়ের ডিজিএম হাবিব উন নবী, যারা সিন্ডিকেট গড়ে বদলি, পদোন্নতি ও টেন্ডার বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক বলেন, সিবিএ কোনোভাবেই এমন সেমিনারে যোগ দেওয়ার এখতিয়ার রাখে না। এ ঘটনায় আমরা বিব্রত ও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছি।

ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আশা প্রকাশ করেছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সুশাসন, পেশাদারিত্ব ও সিন্ডিকেটমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করবেন।