কার্গো অগ্নিকাণ্ডে ২৫০ কারখানার পণ্য ক্ষতির আশঙ্কা: বিজিএমইএ

ছবি: সংগৃহীত
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণে কাজ শুরু করেছে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠনগুলো। ইতোমধ্যে তারা নিজ নিজ সদস্যদের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের তালিকা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। এক-দুই দিনের মধ্যেই কার্গো ভিলেজে কী পরিমাণ পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার সঠিক তথ্য জানা যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে বিমানবন্দর কত দিন আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে, সেই অনিশ্চয়তাতেও রয়েছেন রপ্তানিকারকরা।
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন মূলত ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নির্ধারণে ব্যস্ত। বিভিন্ন খাতভিত্তিক সংগঠন তাদের সদস্যদের নির্দিষ্ট ফরম্যাটে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের তালিকা পাঠাতে বলেছে।
সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এক-দুই দিনের মধ্যেই বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ সম্পন্ন হলে ক্ষতির পূর্ণ চিত্র পাওয়া যাবে।
ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, যদি বিমানবন্দরের কার্যক্রম দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকে, তবে শুধু যাত্রী পরিবহন নয়, রপ্তানি কার্যক্রমও বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।
বাংলাদেশ থেকে সাধারণত তৈরি পোশাক, পচনশীল পণ্য (যেমন শাকসবজি, ফলমূল, পান ইত্যাদি), এবং আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে প্রেরিত পণ্য ও ডকুমেন্ট বেশি রপ্তানি হয়। ফলে এই খাতের ব্যবসায়ীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, কী পরিমাণ পণ্যের ক্ষতি হয়েছে, এই মুহূর্তে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে সাধারণত আমাদের সদস্য কারখানাগুলো প্রায় সবাই এয়ারে পণ্য পাঠান। প্রতিদিন গড়ে ২০০–২৫০টি কারখানার পণ্য রপ্তানি হয়। সে হিসেবে এই পরিমাণ কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছি।
তিনি আরও বলেন, বিমানবন্দর বন্ধ থাকলেও রপ্তানিকারকরা ক্ষতির মুখে পড়বেন। যদি তা দ্রুতই খুলে দেওয়া হয় তবে ক্ষতি তুলনামূলক কম হবে, কিন্তু বেশি দিন বন্ধ থাকলে ক্ষতির পরিমাণও বাড়বে।
একইভাবে সবজি ও পচনশীল পণ্য রপ্তানিকারক সমিতি (বিএফভিএপিইএ)-এর সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমাদের প্রতিদিনই অনেক পণ্য থাকে, এমনটা নয়। বিমানের স্থান ফাঁকা থাকার ওপর নির্ভর করে আমরা বিভিন্ন ডেস্টিনেশনে পণ্য পাঠাই। তাই যেদিন স্থান বেশি পাই, সেদিন পণ্যও বেশি দিতে পারি। আমরা এখন খোঁজ নিচ্ছি আজকে আমাদের সদস্যদের কী পরিমাণ পণ্য ছিল।
তিনি আরও যোগ করেন, পচনশীল পণ্য হওয়ায় আমরা চাই দ্রুত বিমান চলাচল শুরু হোক। এতে আমাদের রপ্তানির জন্য পাইপলাইনে থাকা পণ্যগুলো নষ্ট হবে না।
অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে বিমানবন্দরের কার্গো কার্যক্রম কতদিন স্থগিত থাকবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রুত ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন শেষ করে আংশিক কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, যাতে পচনশীল পণ্যের রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতির জন্য শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ ও দ্রুত বিমান চলাচল স্বাভাবিক করার দাবি তুলেছেন ব্যবসায়ীরা, যাতে পচনশীল ও তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন রপ্তানি খাতের ক্ষতি সীমিত রাখা যায়।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি