ইন্দোনেশিয়ায় সহিংসতা, চীন সফর স্থগিত প্রেসিডেন্টের
ছবি: সংগৃহীত
ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে সহিংস বিক্ষোভ ও আঞ্চলিক সংসদ ভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রেক্ষাপটে দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো তার পূর্বনির্ধারিত চীন সফর বাতিল করেছেন। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর বেইজিংয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের আত্মসমর্পণের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত কুচকাওয়াজে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও, দেশে চলমান অস্থিরতার কারণে তিনি সফরে যাচ্ছেন না বলে শনিবার (৩০ আগস্ট) জানানো হয়েছে।
প্রায় এক বছর আগে দায়িত্ব নেওয়া প্রাবোও সরকারের জন্য এটি সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। রাজধানী জাকার্তায় আইনপ্রণেতাদের বেতন বৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলন থেকেই বিক্ষোভের সূচনা হয়। পরে একটি পুলিশ গাড়ির ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যুর পর আন্দোলন আরও তীব্র রূপ নেয় এবং তা দ্রুত বিভিন্ন প্রদেশে ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় গণমাধ্যম ও কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, বিক্ষোভকারীরা অন্তত তিনটি প্রদেশে আঞ্চলিক সংসদ ভবনে আগুন দিয়েছে। দক্ষিণ সুলাওয়েসি প্রদেশের রাজধানী মাকাসারে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডে অন্তত তিনজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পশ্চিম নুসা তেংগারা, পশ্চিম জাভা ও মধ্য জাভার কয়েকটি শহরেও সংসদ ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ককে অবৈধ ঘোষণা মার্কিন আপিল আদালতের
শনিবার এক ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট প্রাবোওর মুখপাত্র প্রাসেত্যো হাদি বলেন, প্রেসিডেন্ট সরাসরি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং সেরা সমাধান বের করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও জানান, প্রেসিডেন্ট সফর বাতিলের কারণে চীন সরকারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সফর বাতিলের আরেকটি কারণ হিসেবে আগামী সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতিকেও উল্লেখ করা হয়।
বিক্ষোভের সময় অনলাইনে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগে সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ওপর চাপ বাড়িয়েছে। জাকার্তায় টিকটক, মেটা-সহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধিদের ডেকে কনটেন্ট মডারেশন জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন টিকটক ঘোষণা করেছে, তারা ইন্দোনেশিয়ায় সাময়িকভাবে তাদের লাইভ ফিচার বন্ধ রেখেছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বিক্ষোভের সূত্রপাত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অসন্তোষ থেকে হলেও তা এখন সরকারি কর্তৃত্ব ও জনআস্থার বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দেশজুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট প্রাবোওর সামনে আরও কঠিন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হতে পারে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








