গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৭১ ফিলিস্তিনি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা আরও তীব্র হয়েছে। এতে নতুন করে অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৫১ জন আহত হয়েছেন। শুধু গাজা সিটিতেই নিহত হয়েছেন ৩৭ জন। শুক্রবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়  এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ইসরায়েল আরও বৃহত্তর হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ রাদওয়ান এলাকার একটি স্কুল ভবনের উপর ইসরায়েলি একটি কোয়াডকপ্টার বিস্ফোরক নিক্ষেপ করলে অন্তত ১২ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। ওই স্কুলে অনেক ফিলিস্তিনি অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

এছাড়া আল-আহলি হাসপাতালের এক চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে, গাজা সিটির তুফাহ এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও একজন নিহত হয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, অনাহার ও অপুষ্টিতে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে একটি শিশু রয়েছে। এ নিয়ে দুর্ভিক্ষজনিত মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৭৩ জনে, এর মধ্যে ১১২ জনই শিশু। মন্ত্রণালয় জানায়, ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়াদের উদ্ধার করতে সরঞ্জামের অভাবে দলগুলো কাজ করতে পারছে না।

এছাড়া ১৮ মার্চ থেকে যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তি ভেঙে ইসরায়েল সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে ১০ হাজার ৭১৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৫ হাজার ৩২৪ জন আহত হয়েছেন।

মানবিক সহায়তা নিতে আসা সাধারণ মানুষের ওপরও ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এমন হামলায় নিহত হয়েছেন ২৪ জন এবং আহত হয়েছেন ১৩৩ জন। ২৭ মে থেকে এ ধরনের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৬০ জন এবং আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ১৯৭ জন।

আরও পড়ুন: গাজায় দুর্ভিক্ষের ঘোষণা জাতিসংঘের

এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, হামাস ইসরায়েলের শর্ত না মানলে গাজার সবচেয়ে বড় শহর ধ্বংস করে দেওয়া হবে। তিনি এক্স-এ (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, “খুব শিগগিরই গাজায় হামাসের খুনি ও ধর্ষকদের মাথার ওপর নরকের দরজা খুলে যাবে।”

ইসরায়েলের শর্তের মধ্যে রয়েছে—সব বন্দিকে মুক্তি দেওয়া এবং হামাসের পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ। তবে হামাস জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের নিশ্চয়তা ছাড়া তারা নিরস্ত্রীকরণে রাজি নয়।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ৬২ হাজার ২৬৩ জন নিহত এবং ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬৫ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলায় ইসরায়েলে নিহত হন ১ হাজার ১৩৯ জন এবং জিম্মি হন ২০০ জনের বেশি।