ইরানে ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দা জানাল ভেনেজুয়েলা

মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনা ও সামরিক সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম প্রভাবশালী বামপন্থী নেতা নিকোলাস মাদুরো আবারও তার স্পষ্ট ও তীব্র অবস্থান প্রকাশ করলেন। 

ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ইরানবিরোধী সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে মাদুরো শুধু নিন্দাই জানাননি, বরং ইরানের সামরিক জবাবকে "অভূতপূর্ব প্রতিরোধের প্রতীক" হিসেবে তুলে ধরেছেন। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে এই বক্তব্য ইতোমধ্যেই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ইসরায়েলের ইরানবিরোধী সামরিক আগ্রাসনের কড়া সমালোচনা করেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। 

তিনি বলেন, ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থা কখনোই কল্পনা করতে পারেনি যে ইরান এত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সামরিক শক্তি দিয়ে জবাব দেবে।

তিনি আরও মন্তব্য করেন, বিশ্ব এখন জানে, ইরান অপরাধী ইসরাইলি শাসকদের বিরুদ্ধে সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে এবং এই প্রতিরোধের মধ্য দিয়েই মধ্যপ্রাচ্যে একটি নতুন বাস্তবতা সৃষ্টি হয়েছে।

ইসরায়েলের সামরিক হামলার জবাবে ইরান ১৭ জুন রাতে ব্যাপক পাল্টা হামলা চালায়। 

আরও পড়ুন: তথ্যহীন অভিযোগে ইরানের ওপর হামলা

এর প্রতিক্রিয়ায় মাদুরো বলেন, ইসরায়েল শুধু সন্ত্রাসী হামলা এবং ইরানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের হত্যার হুমকি দিয়েই নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। এটি আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।

১৫ জুন সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাস ও ইরানের রাজধানী তেহরানে রেভল্যুশনারি গার্ডের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরায়েল, যাতে ইরানের কয়েকজন শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন। এর পরপরই ইরান সরাসরি ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা শুরু করে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই মাদুরোর বক্তব্য আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিহত ইরানি কর্মকর্তাদের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং ইসরায়েলের উচ্চপদস্থ নেতাদের ‘উস্কানিমূলক ও অশালীন’ ভাষার কঠোর নিন্দা জানান। 

তিনি বলেন, এ ধরনের ঘৃণ্য বক্তব্য আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে আরও উত্তপ্ত করে তোলে এবং ইহুদিবাদী শাসনের আসল রূপ প্রকাশ করে।

মাদুরোর বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনাপ্রবাহে লাতিন আমেরিকার অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে। ইরানের প্রতিরোধকে তিনি যে রকমভাবে সমর্থন করেছেন, তা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি নির্ভীক ও বিভাজনমূলক বার্তা পাঠিয়েছে। এই বক্তব্য শুধু নিন্দা নয়, বরং ইরানপন্থী প্রতিরোধে লাতিন আমেরিকার নীতিগত সমর্থনের প্রতিফলন।