দিল্লির লাল কেল্লায় শক্তিশালী বিস্ফোরণ, নিহত ৮
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক লাল কেল্লার কাছে ভয়াবহ গাড়িবোমা বিস্ফোরণে অন্তত ৮ জন নিহত এবং আরও ১১ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (১০ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে লাল কেল্লা মেট্রো স্টেশনের ১ নম্বর গেটের কাছে এই শক্তিশালী বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, বিস্ফোরণের পর আশপাশের তিন থেকে চারটি গাড়িতে আগুন ধরে যায়, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং গাড়িগুলো সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় একটি ভ্যানের দরজা উড়ে যায় এবং আরেকটি গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন চুরমার হয়ে যায়।
দিল্লি পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, লাল কেল্লার কাছে অত্যন্ত শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটেছে। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ (এলএনজেপি) হাসপাতালে নেওয়া হয়।
চিকিৎসকরা সেখানে আটজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
দিল্লি ফায়ার সার্ভিসের (ডিএফএস) পরিচালক জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের খবর পাওয়ার পরপরই অন্তত ২০টি ফায়ার ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পাশাপাশি আশপাশের এলাকায় আর কোনো বিস্ফোরক রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ পুরো এলাকা ঘিরে ফেলেছে এবং লাল কেল্লা সংলগ্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষে সেনা ঘাঁটি ও সেনা স্টেশন করল ভারত
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আমার বাড়ির ছাদ থেকে বিশাল আগুনের গোলা দেখতে পেয়েছি। বিস্ফোরণের শব্দ এত ভয়াবহ ছিল যে আশপাশের ভবনের জানালাগুলো কেঁপে উঠেছে।
আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আমি গুরদুয়ারায় ছিলাম। হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ শুনি। বুঝতেই পারিনি কী ঘটেছে, শুধু বিশাল এক ধোঁয়ার মেঘ দেখতে পাই।
দিল্লি পুলিশের সূত্র জানায়, এটি একটি উচ্চক্ষমতার বিস্ফোরণ। ফরেনসিক এবং প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞদের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি পরিকল্পিত গাড়িবোমা হামলা হতে পারে, তবে এখনো কোনো গোষ্ঠী এ ঘটনার দায় স্বীকার করেনি।
বিস্ফোরণের পর রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। লাল কেল্লা পুরনো দিল্লির ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত এবং এটি রাজধানীর অন্যতম জনপ্রিয় ঐতিহাসিক পর্যটনকেন্দ্র হওয়ায় ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এদিকে, একই দিনে দিল্লির পার্শ্ববর্তী হরিয়ানা রাজ্যের ফরিদাবাদে একটি ভাড়া বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।
পুলিশ জানিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মিরের পুলওয়ামার বাসিন্দা ডা. মুজাম্মিল শাকিল ওই বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলেন। তিনি সম্প্রতি একটি সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে গ্রেফতার হয়েছেন।
ভারতের পুলিশ জানিয়েছে, হরিয়ানা ও জম্মু-কাশ্মির পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ অভিযানে গত ১৫ দিনে এই নেটওয়ার্কটি ধ্বংস করা হয়েছে। এ সময় ২ হাজার ৯০০ কিলোগ্রামেরও বেশি বোমা তৈরির উপকরণ উদ্ধার করা হয়।
দিল্লি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার জানিয়েছেন, এটি কেবল একটি বিচ্ছিন্ন বিস্ফোরণ নয়—আমরা সম্ভাব্য নেটওয়ার্ক ও সংগঠিত হামলার দিকেও নজর রাখছি। শহরের প্রবেশপথ, মেট্রো স্টেশন, বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
বর্তমানে ঘটনাস্থলে বোম্ব স্কোয়াড, ফরেনসিক দল ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তদন্তে নিয়োজিত রয়েছেন। বিস্ফোরণের কারণ ও নেপথ্যের সংগঠন উদ্ঘাটনে তদন্ত চলমান।
সূত্র: এনডিটিভি
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








