News Bangladesh

খুলনা সংবাদদাতা || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৯:৪৮, ১২ নভেম্বর ২০২৫
আপডেট: ১৯:৪৯, ১২ নভেম্বর ২০২৫

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সম্পত্তি নিয়ে লুটপাটকারিরা আবারও তৎপর

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সম্পত্তি নিয়ে লুটপাটকারিরা আবারও তৎপর

ছবি: নিউজবাংলাদেশ

খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড নিয়ে পাল্লাপাল্টি দুই পক্ষের দ্বন্ধে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার আমলে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন আয়বর্ধক সম্পদ কতিপয় মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানেরা লুটেপুটে খেয়েছে। ২৪’র ৫ আগস্ট ছাত্র- জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেলে এই চক্রটি কিছুদিন চুপচাপ থাকলেও আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তারা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের জমি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিজেদের দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডারসহ অন্যরা প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে জনৈক মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলী ( মুজিব বাহিনীর সদস্য) মুক্তিযোদ্ধা কোটায় একাধিক সন্তানের চাকরি, সম্পত্তি হস্তগতসহ বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা গ্রহণকারীরা আবারও তৎপর হয়ে উঠেছেন। কতিপয় মুক্তিযোদ্ধা  ডুমুরিয়া উপজেলা সদরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স দখল, মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করছে। তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের নামে বরাদ্দকৃত সরকারি খাস জমিতে বিধি বর্হিভূতভাবে বহুতল পাকা ভবর নির্মাণ করে ভোগ দখল করছেন। এমনকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাকিবুজ্জামান সরদার মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড নামে ভূয়া সংগঠন বানিয়ে অপকর্ম করে যাচ্ছে। ওই রাকিবুজ্জামানের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ রয়েছে। তিনি আওযামী লীগ আমলে বেশির ভাগ সময়ে স্কুলে অনুপস্থিত থাকতেন। কেউ কিছু বলার সাহস পেত না। এমনকি গত ২৭ অক্টোবর স্কুল থেকে পিতার অসুস্থতার কথা বলে চলে আসেন। তিনি ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে ডুমুরিযা উপজেলা মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালযের শিক্ষক মোঃ রাকিবুজ্জামান সরদার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন অর্থ আত্মসাত ও সম্পত্তিব দখল করিনি। ওইদিন আমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বলে ছুটি নিয়েছিলাম।

বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুন্নবী খোকা জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ও মার্কেট উন্নয়ন কমিটির নাম ব্যবহার করে যে সংবাদ সম্মেলন করেছে সেটি বেআইনি। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে পাশ কাটিয়ে ২৫ অক্টোবর বীর মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট কমিটি নামে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি মনগড়া কমিটি গঠণ করা হয়েছে। ওই কমিটিতে সদস্য সচিব পদে বিকাশ বাগচীকে রাখা হয়েছে। অথচ তিনি গত ২২ অক্টোবর শারীরিক অসুস্থ্যতা দেখিয়ে পদ থেকে ইস্তফা দেন। এছাড়া ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে চারজন অমুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। তারা হলেন- অপন সহোদর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ রাকিবুজ্জামান সরদার ও রিযাজুল ইসলাম। এছাড়া কমিটির অন্য ২ অমুক্তিযোদ্ধা হচ্ছেন মোঃ আমিনুল ইসলাম ও মোঃ শহিদুল ইসলাম।

আরও পড়ুন: খুলনায় বরাদ্দের নামে খাদ্য গুদাম আ.লীগ নেতার চাচার দখলে

মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিক বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পদ দখল করতে আওয়ামী সরকার আমলে দখলবাজ চক্র আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা অর্ন্তবর্তিকালীন সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আওযামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর হয়ে উঠেছে।

ডুমুরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ হাবীবুর রহমান বলেন, সহকারী শিক্ষক রাকিবুজ্জামানের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে সরকারি নিয়ম বর্হিভূত কার্যকলাপের নানা অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, ২৭ তারিখ সে পিতার অসুস্থ্যতার কথা বলে স্কুল থেকে চলে আসেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক হাজিরা খাতায় সিএল (ক্যাজুয়াল লিভ) লিখে রেখেছেন। আইনবিরোধী কার্যকলাপের ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। ৃ

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়