News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১২:২০, ২৮ মার্চ ২০১৫
আপডেট: ০৯:৩১, ২ জুন ২০২০

ছাত্র পেটান সহ.শিক্ষক, ঘুষিতে দাঁত গেল প্রধান শিক্ষকের

ছাত্র পেটান সহ.শিক্ষক, ঘুষিতে দাঁত গেল প্রধান শিক্ষকের

রাজশাহী: বনভোজনের চাঁদা দিতে না পারায় রাজশাহীর বাঘায় অষ্টম শ্রেণির ৪২ শিক্ষার্থীকে  বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পেটালেন।

এ খবর পেয়ে অভিভাবকেরা বিদ্যালয় ঘেরাও করে হামলা চালিয়ে প্রধান শিক্ষকের দুটি দাঁত ভেঙে দিয়েছেন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চণ্ডীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নাম নজরুল ইসলাম। অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষকের নাম মোহাম্মদ আলী।

অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর পুলিশ তাঁকে থানায় নিয়ে যায়।

অভিভাবকদের দাবির মুখে অভিযুক্ত শিক্ষক চাকরি থেকে অব্যাহতি চেয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির কাছে আবেদন করেন।

অষ্টম শ্রেণির কজন শিক্ষার্থী জানায়, “তাদের ক্লাসে ১০৬ জন শিক্ষার্থী। বনভোজনের জন্য তাদের ১০০ টাকা চাঁদা নির্ধারণ করা হয়। অনেকেই এ পরিমাণ টাকা চাঁদা দিয়ে বনভোজনে যেতে চায়নি।”

সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, “খবর পেয়ে হাফিজুর রহমান নামের একজন অভিভাবক ছুটে এলে শিক্ষক মোহাম্মদ আলী তাঁকে ধমক দেন। তাকে তিনি বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন। ফিরে গিয়ে ওই অভিভাবক অন্য অভিভাবকদের ডেকে নিয়ে বিদ্যালয়ে যান। তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় চণ্ডীপুর বাজারের লোকজনও যান। তাঁরা বিদ্যালয় ঘেরাও করে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক উত্তেজিত অভিভাবকদের বোঝানোর চেষ্টা করতে এলে অভিভাবকেরা তাঁকে পিটুনি দেন। এতে তাঁর ওপরের মাড়ির দুটি দাঁত ভেঙে যায়।”

অষ্টম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, “সকাল সাড়ে নটার দিকে শিক্ষক মোহাম্মদ আলী অষ্টম শ্রেণির ক্লাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বনভোজনের চাঁদা দিতে বললে কেউ দেয়, আবার কেউ পরে দিতে চায়। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এত টাকা দিয়ে বনভোজনে যেতে অপারগতা প্রকাশ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষক ৪২ শিক্ষার্থীকে বেত দিয়ে পেটায়। এতে শিক্ষার্থী রুমা ইয়াসমিন অসুস্থ হয়ে পড়েন।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বাদল চন্দ্র হালদার ও বাঘা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ আহত অবস্থায় বেলা ১১টার দিকে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান জানান, “অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।”

বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক আলমগীর রেজা বলেন, “প্রধান শিক্ষকের মাড়ির দুটি দাঁত ভেঙে গেছে। গণপিটুনিতে তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কালচে দাগ বসে গেছে।”

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, “তিনি সহকারী শিক্ষকদের ডেকে বলেছিলেন, শিক্ষার্থীরা চাঁদা না দিলে বনভোজন পিছিয়ে দেওয়া হবে।  তাঁর দাবি, প্রধান শিক্ষক হিসেবে অভিভাবকদের শান্ত করার জন্য কথা বলতে গিয়ে তিনি হামলার শিকার হয়েছেন।”

শিক্ষার্থীদের পেটানোর ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অভিযুক্ত শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পেটানোর কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “পরের দিন বনভোজন অথচ টাকা ওঠেনি। এ জন্য তাঁর খারাপ লাগছিল। তাই ওদের দুএকটি বাড়ি দিয়েছেন।”

২৯ মার্চ রোববার তাদের বনভোজনের নির্ধারিত দিন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/কেজেএইচ

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়