News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:২৮, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

লকডাউন আতঙ্কে রাজধানীতে সীমিত গণপরিবহন, তুলনামূলক শান্ত পরিস্থিতি

লকডাউন আতঙ্কে রাজধানীতে সীমিত গণপরিবহন, তুলনামূলক শান্ত পরিস্থিতি

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন কর্মসূচি’ ঘোষণা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রেক্ষাপটে সাধারণ মানুষের মধ্যে শঙ্কা বিরাজ করছে। অনেকেই ঘর থেকে বের হতে অনীহা প্রকাশ করছেন, ফলে রাস্তায় ব্যক্তিগত যানবাহন ও অটোরিকশার আধিক্য লক্ষ্য করা গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে রাজধানীতে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে গণপরিবহনের সংখ্যা সীমিত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকায় যাত্রীরা সাময়িক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন।

রাজধানীর উত্তরার হাউজবিল্ডিং এলাকা থেকে মীর রাকিব সকাল ৮টায় গুলশান-২ সার্কেলের কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তিনি জানান, রাস্তায় লোকাল বাস কম থাকায় সাধারণ যাত্রীদের বেশ কষ্ট হচ্ছে, বিশেষত নারী যাত্রীরা পায়ে হেঁটে বা রিকশায় চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। মেট্রোরেল শাটল সার্ভিস ও কিছু ডাবল ডেকার বাসে যাত্রী সংখ্যা বেশি ছিল।

টঙ্গী থেকে ফার্মগেট আসা ইমরান শিকদার ও মধ্যবাড্ডার বাসিন্দা অপূর্ব কৈরী জিতু জানান, বিভিন্ন বাসের সংখ্যা কম থাকলেও রাস্তায় তেমন দুর্ভোগ হয়নি। তবে মধ্যবাড্ডা ইউলুপের পাশে আকাশ পরিবহনের একটি বাসে গতকাল রাতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, যা সাময়িকভাবে কিছু বাস সরিয়ে নেওয়ার কারণ হয়েছে।

আরও পড়ুন: তেজগাঁও স্টেশনে পরিত্যক্ত ট্রেনের বগিতে আগুন, দুজন আটক

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে যাত্রী স্বাতী সাহা বলেন, “বাসে যাত্রী সংখ্যা অতিরিক্ত ছিল। অনেককে দাঁড়িয়ে যেতে হয়েছে।” ঢাকা রেল স্টেশনের কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সকাল থেকে সব আন্তঃনগর ও মেইল ট্রেন শিডিউল অনুযায়ী ছেড়ে গেছে এবং যাত্রী ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরএনবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মেট্রোরেল চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে।

রাজধানীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও উপস্থিতির হার কম। গভ. ল্যাবরেটরি স্কুলের এক অভিভাবক সন্তানকে স্কুলে না পাঠানোর কারণ হিসেবে নিরাপত্তা শঙ্কা উল্লেখ করেছেন। 

বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রোগীর স্বজন আজিজুল হক সুজন বলেন, মায়ের অসুস্থতার কারণে উত্তরা থেকে রওনা হয়েছিলাম। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, তবে শঙ্কা কাজ করেছিল।

রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজারে পুলিশের টিম সন্দেহভাজন পরিবহন চেক করছে, সন্দেহজনক যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত দুই দিনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ঢাকার বাইরের স্থানে যেমন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া বাসেও একজন যাত্রী অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে আসলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দলের নেতারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

আজকের পরিস্থিতি সকাল পর্যন্ত তুলনামূলকভাবে শান্তিপূর্ণ। রাস্তায় গণপরিবহন সীমিত থাকলেও ব্যক্তিগত যানবাহন ও মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক থাকায় কর্মমুখী মানুষ তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়