গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলার চক্রান্ত চলছে: মির্জা ফখরুল
ফাইল ছবি
দেশের গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলার জন্য নানা ধরনের চক্রান্ত চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (০৭ নভেম্বর) জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণী ও জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ৭ নভেম্বর সেনাবাহিনী ও সর্বস্তরের জনগণের সার্বিক সমর্থনের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। এই বিপ্লবের মূল চরিত্র ছিল জিয়াউর রহমানের প্রতি সেনাবাহিনী ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন। তাই ৭ নভেম্বর জাতীয় জীবনে এক ঐতিহাসিক অবিস্মরণীয় দিন।
তিনি আরও বলেন, সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানে সেদিন পূরণ হয়েছিল রাজনৈতিক শূন্যতা। এই বিপ্লবের সম্মিলিত প্রয়াসে জনগণ নতুন প্রত্যয়ে জেগে ওঠে। ৭ নভেম্বর বিপ্লবের সফলতার সিঁড়ি বেয়েই আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক মুক্তির পথ পেয়েছি।
বিএনপি মহাসচিবের ভাষ্য, এই বিপ্লবের মধ্য দিয়েই আইনের শাসন, বাক, ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং সামাজিক শান্তি ফিরে এসেছিল। দেশ, জনগণ, স্বাধিকারসহ জাতীয় স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী সুগভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল।
তিনি বলেন, সেই সঙ্গে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমানকে সমর্থন করে সামরিক বাহিনী এবং সাধারণ মানুষও বিপ্লবে অংশ নেয়।
আরও পড়ুন: বিপ্লব ও সংহতি দিবস নিয়ে তারেক রহমানের বার্তা
জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উন্মেষের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি জাতিকে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির মহাসড়কে উঠিয়েছিলেন। আর সেজন্যই আমাদের জাতীয় জীবনে ৭ নভেম্বরের বিপ্লবের গুরুত্ব অপরিসীম।
তিনি বলেন, আজকের এই মহান দিনে আমি দেশবাসীসহ সবাইকে আহ্বান জানাই— এখনো দেশে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হয়নি। আর সেজন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।
৫ আগস্টের পর দেশবাসী কিছুটা স্বস্তি পেলেও এখনও বহু কাজ বাকি রয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ন্যায়বিচার, জবাবদিহি ও সুশাসনের অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হয়নি। এখনও দেশের বিভিন্ন জনপদে বিচারবহির্ভূত হত্যায় মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। আইনি প্রতিকার থেকে অসহায় মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে পদানত করার জন্য কুচক্রীমহল অপতৎপরতা চালাচ্ছে। গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলার জন্য বিভিন্ন রকম চক্রান্ত চলছে।
জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক ব্যবস্থাসহ রাষ্ট্রের বহু বিষয়ে আমূল সংস্কার আনেন জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশের অগ্রগতির টার্নিং পয়েন্ট এই ৭ নভেম্বর।
তিনি বলেন, নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হবে। তাহলেই এ দিবসের যথাযথ মূল্যায়ন নিশ্চিত হবে।
বিপ্লব ও সংহতি দিবসে গণতন্ত্রকে সংহত রাখার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
শেষে তিনি বলেন, যে চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরে আমরা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, সেই একই চেতনা বুকে ধারণ করে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া, স্বাধীনতার সুফল তথা অর্থনৈতিক মুক্তি, শান্তি-শৃঙ্খলা, সাম্য, ন্যায় ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি ও দুঃশাসনকে চিরতরে বিদায় করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








