‘পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া চূড়ান্ত, যা যা থাকছে
ফাইল ছবি
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যে প্রণীত জুলাই সনদ অনুযায়ী পুলিশের কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা, পেশাদারিত্ব ও জনবিশ্বাস নিশ্চিতের লক্ষ্যে প্রণীত ‘পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই অধ্যাদেশের খসড়াটি অনুমোদনের জন্য উপদেষ্টা পরিষদে পাঠানো হবে।
রবিবার (২ নভেম্বর) প্রক্রিয়াটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্রগুলোর মতে, অধ্যাদেশটি অনুমোদিত হলে এটি দেশের পুলিশ প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারধর্মী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে গঠিত উপদেষ্টাদের একটি কমিটি কমিশনের কাঠামো, এখতিয়ার ও কার্যাবলি নির্ধারণ করে খসড়াটি প্রস্তুত করেছে।
উল্লেখ্য, পুলিশ সংস্কার ছিল চলতি বছরের জুলাই মাসে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত জাতীয় সনদের অন্যতম অঙ্গীকার।
খসড়া অনুযায়ী, একজন অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পুলিশ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
অন্য সদস্যদের মধ্যে থাকবেন- একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, একজন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা (গ্রেড-২ বা তার ঊর্ধ্বে), অন্তত অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক পদমর্যাদার একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা, পুলিশ একাডেমির একজন সাবেক অধ্যক্ষ, কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত কোনো আইন বা অপরাধতত্ত্ব বিষয়ের অধ্যাপক এবং কমপক্ষে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন মানবাধিকার কর্মী।
চেয়ারম্যানের পদমর্যাদা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতির সমান, আর সদস্যদের পদমর্যাদা হবে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমান। প্রত্যেক সদস্য চার বছরের জন্য নিয়োগ পাবেন, তবে পুনঃনিয়োগের সুযোগ থাকবে না।
খসড়ায় বলা হয়েছে, কমিশনের যেকোনো নির্দেশনা বা সুপারিশ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তিন মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দিতে হবে। কোনো সুপারিশ বাস্তবায়নে জটিলতা দেখা দিলে কর্তৃপক্ষ একই সময়ের মধ্যে কমিশনকে জানাবে, যাতে কমিশন বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারে।
আরও পড়ুন: ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর স্থগিত কমিটি পুনর্বহাল
কমিশন গঠনের জন্য সাত সদস্যের একটি নির্বাচন কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে থাকবেন প্রধান বিচারপতির মনোনীত একজন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, সরকার ও বিরোধী দলের প্রতিনিধি এবং আরও কয়েকজন সদস্য।
এই নির্বাচন প্রক্রিয়া ৩০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে, এবং কমপক্ষে পাঁচ সদস্য উপস্থিত থাকলে কোরাম পূর্ণ হবে।
খসড়া অধ্যাদেশে কমিশনের প্রতিষ্ঠা, প্রশাসনিক কাঠামো, কর্মপরিধি, সদস্যদের চাকরির শর্ত, অপসারণের কারণ, পুলিশ শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা, অভিযোগ তদন্ত, পুলিশ সদস্যদের অভিযোগ নিষ্পত্তি এবং পুলিশ প্রধান নিয়োগের নির্দেশিকা সংক্রান্ত বিস্তারিত বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি








