ইসরায়েলের বন্দি ফ্লোটিলা অভিযাত্রীরা অনশনে
ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েল – দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হওয়া গাজা-মুখী ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ মিশনের অভিযাত্রীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করেছেন।
শুক্রবার (০৩ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক চারটি সামাজিক সংস্থার জোট ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)।
বিবৃতিতে এফএফসি জানিয়েছে, ইসরায়েলের নৌবাহিনী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা মিশনের নৌযান, ক্রু এবং অভিযাত্রীদের আটক করেছে। এই অবৈধ আটক এবং মানবিক ন্যায়ের জন্য আমাদের মিশনের অভিযাত্রীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করেছেন।
এফএফসির আরও বলা হয়েছে, বুধবার (০১ অক্টোবর) থেকে অভিযাত্রীদের আটক শুরু হওয়ার দিনই তারা অনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
গত ৩১ আগস্ট স্পেনের একটি বন্দর থেকে গাজার উপকূলের দিকে যাত্রা শুরু করেছিল এই মিশন। মিশনের উদ্দেশ্য ছিল ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য ও ওষুধ পৌঁছে দেওয়া। এই অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন ৪৪টি দেশের প্রায় ৫০০ জন নাগরিক, যার মধ্যে ছিলেন সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলন কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি ও রাজনীতিবিদ মান্ডলা ম্যান্ডেলা, সংসদ সদস্য, আইনজীবী, রাজনৈতিক কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবী।
আরও পড়ুন: এফএফসি’র নতুন মিশন: গাজায় আবার ত্রাণ পাঠাচ্ছে ফ্লোটিলা
গাজার জলসীমায় পৌঁছানোর পরপরই, একটি নৌযান ব্যতীত বাকি সব নৌযান ইসরায়েলি নৌবাহিনী আটক করে। আটক নৌযান, ক্রু এবং আরোহীদের ইসরায়েলের বন্দরে নেওয়া হয়।
প্রথমে বুধবার রাতে ১৩টি নৌযান আটক করা হয়। বাকি ৩০টি নৌযান তখনও গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা চালাচ্ছিল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত, একে একে ২৯টি নৌযান আটক করে ইসরায়েলের নৌসেনারা। সর্বশেষ নৌযানটিও শুক্রবার সকালে আটক করা হয়।
এদিকে, আইনি সহায়তা গোষ্ঠী ‘আদালাহ’ জানিয়েছে, গিভন কারাগারে অনুষ্ঠিত এক শুনানিতে ফ্লোটিলা অভিযানে অংশ নেওয়া ১৪ জন অধিকারকর্মীর আটকাদেশ বহাল রাখা হয়েছে। এই ১৪ জন ফ্লোটিলার নৌযান ‘হান্দালা’ তে ছিলেন। শুনানির সময় অধিকারকর্মীরা জোর দিয়ে জানিয়েছেন, এটি তাদের মানবিক মিশন ছিল, যা গাজায় ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দ্বারা অনুপ্রাণিত।
একজন মার্কিন অধিকারকর্মী আদালতে জানান, তিনি ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বারা গুরুতর শারীরিক হেনস্তার শিকার হয়েছেন। যদিও ইসরায়েল তাদের মামলাগুলোকে অভিবাসন নীতি লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করছে, আদালাহ বলেছে, আটকদের আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ইসরায়েলে আনা হয়েছে, যা আইনত অবৈধ।
সংগঠনটি জানিয়েছে, নৌযান হান্দালায় থাকা ইসরায়েলি-আমেরিকান দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা দুই যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের এই মিশন আন্তর্জাতিক মানবিক ও পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত অনেক নামীদামী ব্যক্তিত্বকে একত্রিত করেছে। তবে, ইসরায়েলি নৌবাহিনী অভিযান প্রতিহত করার জন্য গত কয়েক দিনে সকল নৌযান আটক করেছে এবং অভিযাত্রীরা বর্তমানে বন্দি অবস্থায় অনশন চালাচ্ছেন।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, টাইমস অফ ইসরায়েল, এফএফসি কমিটি
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








