News Bangladesh

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৬:০১, ৩ অক্টোবর ২০২৫

এফএফসি’র নতুন মিশন: গাজায় আবার ত্রাণ পাঠাচ্ছে ফ্লোটিলা

এফএফসি’র নতুন মিশন: গাজায় আবার ত্রাণ পাঠাচ্ছে ফ্লোটিলা

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার জন্য নতুন ত্রাণ বহর পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর জোট ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)।

বৃহস্পতিবার (০২ অক্টোবর) এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এফএফসি জানায়, তাদের নতুন বহরে মোট ১১টি নৌযান রয়েছে। এর মধ্যে ইতালি ও ফ্রান্সের পতাকাবাহী দুটি জাহাজ গত ২৫ সেপ্টেম্বর ইতালির ওৎরান্তো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেছে। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর আরও ৯টি নৌযান রওনা দেয়। শিগগিরই এ নৌযানগুলো অগ্রবর্তী জাহাজগুলোর সঙ্গে মিলিত হয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ বহর হিসেবে গাজার উদ্দেশে এগিয়ে যাবে।

এফএফসি’র তথ্যমতে, নতুন বহরের নৌযানগুলোতে রয়েছেন প্রায় ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবী ও ক্রু। সংগঠনটির চার সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠান হলো— ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল মুভমেন্ট টু গাজা, মাগরেব সুমুদ ফ্লোটিলা এবং সুমুদ নুসানতারা। ২০০৮ সালে গঠিত হওয়ার পর থেকে গত ১৭ বছরে এফএফসি বহুবার গাজায় মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।

এর আগে গত আগস্ট মাসে এফএফসি ঘোষণা দিয়েছিল, তারা গাজায় খাদ্য ও ওষুধবাহী ৪৩টি নৌযান পাঠাবে। সেই মিশনের নাম দেওয়া হয় ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’। এই অভিযানে অংশ নেন ৪৪টি দেশের প্রায় ৫০০ নাগরিক। তাদের মধ্যে ছিলেন সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি ও রাজনীতিবিদ ম্যান্ডলা ম্যান্ডেলা, এছাড়া বহু পার্লামেন্ট সদস্য, আইনজীবী, রাজনৈতিক আন্দোলনকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী।

আরও পড়ুন: গাজার পথে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার শেষ নৌযান দখলে নিল ইসরায়েল

৩১ আগস্ট স্পেনের বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এই বহর। তবে গাজার জলসীমার কাছাকাছি পৌঁছালে ইসরায়েলি নৌবাহিনী সেটিকে আটকায়। প্রথমে বলা হয়েছিল, সব নৌযান আটক করা হয়েছে, পরে একটিকে ব্যতীত বাকি সব নৌযান দখলে নেয় ইসরায়েল। নৌযান, ক্রু এবং যাত্রীদের জোর করে ইসরায়েলের বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।

‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ আটকানোর ঘটনায় ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রতিবাদ ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও রাজনৈতিক মহল এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা এই সমালোচনাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করছে।

এই পরিস্থিতির মধ্যেই এফএফসি নতুন বহর পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। সংগঠনটির দাবি, গাজার মানবিক সংকট ক্রমশ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে, তাই আন্তর্জাতিক নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখা ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই।

ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের এই ঘোষণা একদিকে যেমন যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার জন্য আন্তর্জাতিক সহমর্মিতা ও সমর্থনের প্রতীক, তেমনি ইসরায়েলের অবরোধনীতির বিরুদ্ধে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ হিসেবেও দেখা হচ্ছে। আগের বহর আটক করার ঘটনায় আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপ সত্ত্বেও নেতানিয়াহু সরকার অবস্থান বদলায়নি। 

এই পরিস্থিতির মধ্যেই নতুন ত্রাণবহর পাঠানোর ঘোষণা দিয়ে আবারও আলোচনায় এলো ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন। গাজার মানবিক সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সহায়তার এই প্রয়াস কতটা সফল হবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে।

নতুন বহরের গতিপথে ইসরায়েল আবারো একই কৌশল অবলম্বন করলে বিষয়টি আরও বড় রাজনৈতিক ও মানবিক সংকট তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়