ভেনেজুয়েলার উত্তর-পশ্চিমে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্প
ফাইল ছবি
ভেনেজুয়েলার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ১।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
ইউএসজিএস জানায়, ভূমিকম্পটির উপকেন্দ্র ছিল জুলিয়া রাজ্যের মেনে গ্রান্দে শহর থেকে প্রায় ২৪ কিলোমিটার দূরে এবং রাজধানী কারাকাস থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার পশ্চিমে। ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল মাত্র ৭ দশমিক ৮ কিলোমিটার। ভূত্বকের খুব কাছাকাছি হওয়ায় কম্পন ছিল প্রবল।
রাজধানী কারাকাসসহ ভেনেজুয়েলার একাধিক রাজ্যে ভবন কেঁপে ওঠে এবং আতঙ্কিত হয়ে মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসে। প্রতিবেশী কলম্বিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকাতেও ভবন খালি করে সাধারণ মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের চেষ্টা করে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহত বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেস (জিএফজেড) ভূমিকম্পটির মাত্রা ৬ দশমিক ১ এবং গভীরতা প্রায় ১০ কিলোমিটার বলে জানিয়েছে।
অন্যদিকে ভেনেজুয়েলার যোগাযোগমন্ত্রী ফ্রেডি ন্যানেজ জানিয়েছেন, একই দিনে দুটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। একটি ছিল বারিনাস রাজ্যে, যার মাত্রা ৩ দশমিক ৯। আরেকটি আঘাত হেনেছে জুলিয়া রাজ্যে, যার মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৪।
আরও পড়ুন: লাদাখে সহিংস বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণহানি ৪
এএফপি জানায়, মেনে গ্রান্দে একটি তেলসমৃদ্ধ এলাকা হলেও জনবসতি তুলনামূলকভাবে কম। তবুও ভূমিকম্পটি কেন্দ্রস্থল থেকে শত শত কিলোমিটার দূরে রাজধানী কারাকাসেও অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে অনেক বাসিন্দা ফ্ল্যাট ছেড়ে বাইরে চলে আসেন। ইউএসজিএস জানিয়েছে, এ ঘটনায় বড় কোনো সুনামির আশঙ্কা নেই, ফলে সতর্কতা জারি করা হয়নি।
তবে কিছু প্রতিবেদনে ভূমিকম্পের মাত্রা সামান্য পার্থক্যসহ উল্লেখ করা হয়েছে। ইউএসজিএস ৬ দশমিক ১ মাত্রা জানিয়েছে, আবার স্থানীয় গণমাধ্যমের কিছু সূত্রে ৬ দশমিক ৩ এবং গভীরতা ১৪ কিলোমিটার বলা হয়েছে। এছাড়া কয়েক ঘণ্টা আগে একই এলাকায় ৬ দশমিক ২ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল, যা কলম্বিয়া ও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ আরুবা, কুরাসাও ও বোনায়ারেও টের পাওয়া যায়।
ভেনেজুয়েলা ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিত। দেশটি ক্যারিবিয়ান ও দক্ষিণ আমেরিকান টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষস্থলে অবস্থিত। প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ সক্রিয় ভূমিকম্প অঞ্চলেই বসবাস করেন। গত শতকে দেশটির উত্তরাঞ্চলে একাধিক বড় ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
২০১৮ সালে ভেনেজুয়েলায় আঘাত হানা ৭ দশমিক ২ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। এর আগে ১৯৯৭ সালে পূর্বাঞ্চলীয় সুক্রে প্রদেশের কারিয়াকোতে ভূমিকম্পে ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ১৯৭৬ সালে রাজধানী কারাকাসে ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ৩০০ জন এবং আহত হয়েছিলেন দুই হাজারেরও বেশি মানুষ।
ভেনেজুয়েলার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিয়োসদাদো কাবেলো রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেছেন, এবারের ভূমিকম্পে গুরুতর কাঠামোগত ক্ষতি হয়নি।
সূত্র: আল জাজিরা, এএফপি, ইউএসজিএস, জিএফজেড
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








