লাদাখে সহিংস বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণহানি ৪

ছবি: সংগৃহীত
ভারতের কেন্দ্রশাসিত লাদাখে রাজ্য মর্যাদা ও সাংবিধানিক সুরক্ষার দাবিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত এবং ৫০-এর বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় লেহ শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং পাঁচজনের বেশি লোকের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা তাদের দাবির সমর্থনে অনশন ও কমপ্লিট শাটডাউনের ডাক দিয়েছিলেন।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে লেহ শহরের রাস্তায় নামেন হাজার হাজার মানুষ। তারা রাজ্য মর্যাদা এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে লাদাখকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে স্লোগান দেন।
সংঘর্ষের সময় বিক্ষোভকারীরা বিজেপির কার্যালয় এবং পুলিশের একটি গাড়ি সহ বেশ কয়েকটি গাড়িতে হামলা চালান এবং পুলিশের দিকে পাথর নিক্ষেপ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ব্যবহার এবং লাঠিচার্জের পাশাপাশি গুলি চালাতে বাধ্য হয়। লাদাখের বৃহৎ উৎসবও সহিংসতার কারণে মাঝপথে বাতিল করতে হয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি) এবং কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (কেডিএ)। এলএবি-এর সদস্য জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুক গত দুই সপ্তাহ ধরে শান্তিপূর্ণ অনশনের মাধ্যমে এই দাবিগুলো তুলে ধরছিলেন।
আরও পড়ুন: নিজ দেশে বিমান হামলায় পাকিস্তানে নারী-শিশুসহ নিহত ৩০
তিনি বলেন, আজকের সহিংসতা তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। তবে সহিংসতা আমাদের উদ্দেশ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরতে চাই।
লাদাখের এই বিক্ষোভ দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের শাসনের বিরুদ্ধে অসন্তোষের ফল। ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ৩৭০ ধারা বাতিলের পর জম্মু ও কাশ্মীরকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়, যার মধ্যে লাদাখ একটি। শুরুতে এই পদক্ষেপকে স্থানীয়রা স্বাগত জানালেও, এক বছরের মধ্যে রাজনৈতিক শূন্যতা এবং বিধানসভা না থাকার কারণে অসন্তোষ শুরু হয়।
লাদাখের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে তাদের জমি, সংস্কৃতি এবং সম্পদ রক্ষার জন্য রাজ্য মর্যাদা এবং সাংবিধানিক সুরক্ষার দাবি জানিয়ে আসছে। এই দাবিগুলো যাচাই করতে কেন্দ্র একটি উচ্চ-স্তরের কমিটি গঠন করলেও, ধারাবাহিক আলোচনায় কোনো সমাধান আসেনি। মার্চ মাসে লাদাখের প্রতিনিধিরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে মূল দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান হওয়ায় আলোচনা ভেঙে যায়।
কেন্দ্রীয় সরকার এই সহিংসতার মধ্যেই আগামী ৬ অক্টোবর লাদাখের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার জন্য বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে।
লাদাখের কৌশলগত গুরুত্বের কারণে কেন্দ্রের জন্য এই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলটি প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি