ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: যে বার্তা দিল জাতিসংঘ
ফাইল ছবি
কাশ্মীর ইস্যুতে নতুন করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া সামরিক উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। উভয় পক্ষকে “চরম সংযম প্রদর্শন এবং অবিলম্বে উত্তেজনা হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার” আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক নিউ ইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মহাসচিব বিষয়টি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং উভয় পক্ষকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন—সামরিক উত্তেজনা কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না। কাশ্মীর সমস্যা রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমেই সমাধান হওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার এই দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘাত শুধু আঞ্চলিক নয়, বিশ্বশান্তির জন্যও হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।
২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ ভারতীয় পর্যটক নিহত হন। এই ঘটনার জন্য ভারত পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসীদের দায়ী করে। এরপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা দ্রুত বাড়তে থাকে।
ভারত ৬ মে মধ্যরাতে ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
পাকিস্তান দাবি করে, এই হামলায় ৮ জন নিহত এবং অন্তত ৩৫ জন আহত হন।
এরপর পাকিস্তানও নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পাল্টা হামলা চালায়, যেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনী ৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তান পাল্টাপাল্টি হামলা, নিহত ৩
জাতিসংঘ ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া এবং ওআইসি উভয় দেশকে শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা উভয় পক্ষকে যুদ্ধবিরতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে সংলাপের মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাতে উৎসাহিত করছি।
ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লায়েন বলেন, কাশ্মীরে নিরপরাধ বেসামরিক লোকদের প্রাণহানিতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। ভারত ও পাকিস্তানের উচিত উত্তেজনা না বাড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে পথ খোঁজা।
আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জাতিসংঘের এই বার্তা শুধু প্রতীকী নয়, বাস্তবিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষ করে এমন একটি সময় যখন দুই দেশের গণমাধ্যম, রাজনীতি এবং সামরিক বাহিনী সরাসরি পাল্টাপাল্টি অবস্থানে রয়েছে।
দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনার মাত্রা যেখানে যুদ্ধে রূপ নিতে পারে, সেখানে জাতিসংঘের এই বার্তা একটি সময়োপযোগী কূটনৈতিক পদক্ষেপ। এখন দেখার বিষয়—ভারত ও পাকিস্তান এই আহ্বানে কীভাবে সাড়া দেয়।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








