News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৪:৩৮, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
আপডেট: ১৪:৫৯, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

৬৪ শতাংশ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হচ্ছে ঢাকায়

৬৪ শতাংশ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হচ্ছে ঢাকায়

প্রতীকী ছবি

দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণুর বিস্তার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এমন জীবাণুর উপস্থিতি বাড়ছে যেগুলোর বিরুদ্ধে বর্তমানে কার্যকর কোনো অ্যান্টিবায়োটিক নেই।

সর্বশেষ জাতীয় অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) সার্ভিলেন্স প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আইসিইউ থেকে সংগৃহীত নমুনার ৪১ শতাংশে প্যান-ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট (পিডিআর) জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। অর্থাৎ এসব জীবাণুর বিরুদ্ধে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকর নয়। দেশের হাসপাতালগুলোতে ওষুধ প্রতিরোধী জীবাণুর গড় হার ৪৬ শতাংশ, তবে ঢাকার আইসিইউতে তা ৮৯ শতাংশে পৌঁছেছে।

গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশে ব্যবহৃত মোট অ্যান্টিবায়োটিকের ৫৭ শতাংশই ঢাকায় ব্যবহৃত হচ্ছে। রোগীর চাপ, বিশেষায়িত চিকিৎসা সেবা ও সহজলভ্য ওষুধের কারণে রাজধানীতে অতি ব্যবহারের প্রবণতা বেশি। গবেষকদের মতে, এই অতিরিক্ত ব্যবহারই অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ বাড়িয়ে তুলছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুরুতর সংক্রমণের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়াগুলোর প্রতিরোধ ক্ষমতা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে অনেক ক্ষেত্রে সর্বাধুনিক অ্যান্টিবায়োটিকও কাজ করছে না। আইসিইউতে পিডিআর জীবাণুর দ্রুত বিস্তার রোগীদের জন্য জরুরি সংকেত বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তারা সতর্ক করে বলেছেন, এ পরিস্থিতিতে সাধারণ সংক্রমণও ভবিষ্যতে প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।

গবেষণার আরেক ফলাফলে দেখা গেছে, অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারকারীদের ৬০ শতাংশই নারী, এবং সবচেয়ে বেশি ব্যবহার দেখা গেছে ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণ–তরুণীদের মধ্যে।

চিহ্নিত জীবাণুর মধ্যে ই. কোলি ৩৫ শতাংশ নমুনায় পাওয়া গেছে। এরপর রয়েছে ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া, যা ১৯.২ শতাংশের জন্য দায়ী।

আইইডিসিআরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন হাবিব বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি দেশকে দ্রুত একটি বিপজ্জনক ‘পোস্ট অ্যান্টিবায়োটিক সংকট’ এর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এমন সংকট তৈরি হলে সাধারণ চিকিৎসা ব্যবস্থা মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে।

আরও পড়ুন: উপদেষ্টা পরিষদে গণভোট অধ্যাদেশ অনুমোদন

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ না আনলে আগামী দিনে চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও বিপর্যস্ত হতে পারে।

জাতীয় এএমআর সার্ভিলেন্সের এ গবেষণা ২০১৬ সাল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যানের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। সর্বশেষ ধাপে ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত দেশের ১৩টি সেন্টিনেল সাইট, ২২টি বেসরকারি ও ২টি সরকারি মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরির মাধ্যমে ৯৬ হাজার ৪৭৭ রোগীর নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়