News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৫:৩৬, ১৯ আগস্ট ২০২৫
আপডেট: ১৬:১৩, ১৯ আগস্ট ২০২৫

জেনেভা ক্যাম্পে শিশু হত্যা, গ্রেফতার ২৬

জেনেভা ক্যাম্পে শিশু হত্যা, গ্রেফতার ২৬

ছবি: সংগৃহীত

মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘটিত কিশোর শাহ আলম হত্যা মামলার তদন্তে নতুন মোড় এসেছে। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পূর্বে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেফতারকৃত ২৬ আসামিকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর ফলে এখন থেকে তারা এই মামলার আসামি হিসেবে বিবেচিত হবেন।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানার আদালত শুনানি শেষে তাদের গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন এবং কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেফতারকৃত ২৬ আসামির মধ্যে রয়েছে নাসির হোসেন নাশু, ফাইয়াজ হোসেন, মো. রাসেল, মো. হিরা, মো. আল আমিন, মো. জামিল, মো. ফয়সাল হোসেন, মো. গোলাম রসুল, মো. মোস্তাক, মো. সাইদ হোসেন, মো. শুভ, মো. রাকিব, মো. সেলিম, মো. শাওন, মো. মাসুদ রানা, মো. আকাশ, মো. ইসতিয়াক, মো. রাশেদ, মো. রাসেল, মো. রাজ, মো. রাজিব, মো. বশির, মো. পাপ্পু, শাহ আলম, মো. আজাদ হোসেন ও ফয়সাল হোসেন। এদের মধ্যে শাহ আলম নামের দুজন আসামির পরিচয় পাওয়া গেছে, যা তদন্তে আরও বিস্তারিতভাবে যাচাই করা হচ্ছে।

মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় মাদক ব্যবসা এবং স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। হত্যাকাণ্ডের সাত দিন আগে থেকেই এই এলাকায় একাধিকবার মারামারি ও বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ আগস্ট সকাল থেকে বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলছিল।

আরও পড়ুন: মোহাম্মদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ‘ভাগ্নে বিল্লাল’ গ্রেফতার

ওইদিন দুপুর পৌনে ৩টার দিকে দু'পক্ষ দেশীয় অস্ত্র, ককটেল এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বড় ধরনের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঠিক তখনই ১৬ বছর বয়সী শাহ আলম বছিলা থেকে তার নানির সঙ্গে দেখা করতে জেনেভা ক্যাম্পে গিয়েছিল। সংঘর্ষ চলাকালীন দুর্ঘটনাক্রমে সে তাদের মাঝে পড়ে যায় এবং তাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শাহ আলম নিহত হওয়ার দুদিন পর, গত ১৩ আগস্ট তার বাবা মো. রুবেল বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫০-৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে এই ২৬ জনকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় সন্দেহজনকভাবে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। পরবর্তীতে তদন্তে তাদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় আদালতে তাদের এই হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয়। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করায় এখন তাদের রিমান্ডে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া শুরু হবে। তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, এই ২৬ জন ছাড়াও মামলার বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ড জেনেভা ক্যাম্প এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের দৌরাত্ম্যকে আবারও সামনে এনেছে। 

স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত বিচার ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়