বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইইউ’র পূর্ণাঙ্গ মিশন পরিকল্পনা
ছবি: সংগৃহীত
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশে একটি বড় পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর পরিকল্পনা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকা এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ২০০৮ সালের পর এটি প্রথম পূর্ণাঙ্গ মিশন হতে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকায় রাষ্ট্র অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এ তথ্য জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
তিনি বলেন, ইইউ পর্যবেক্ষক মিশনের বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি, তবে এতে ১৫০–২০০ জন সদস্য থাকতে পারে। এর মধ্যে কিছু সদস্য ভোটের প্রায় ছয় সপ্তাহ আগে আসবেন, বাকি ভোটের এক সপ্তাহ আগে যোগ দেবেন।
রাষ্ট্রদূত মিলার আরও জানান, ভোট চলাকালীন স্থানীয় পর্যবেক্ষক নিয়োগেও ইইউ সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের পর এটাই প্রথমবার, যখন ইইউ বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে। আমাদের লক্ষ্য আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য ভোট নিশ্চিত করা।
প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে দুই পক্ষ শাসন ও সাংবিধানিক সংস্কার, নির্বাচন প্রস্তুতি, বিচার ও শ্রম সংস্কার, বাংলাদেশ-ইইউ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক, এবং দেশের সার্বিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ হস্তান্তর
রাষ্ট্রদূত মিলার জুলাই জাতীয় সনদকে “অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ” দলিল হিসেবে উল্লেখ করেন, যা গণতান্ত্রিক রূপান্তর নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। এছাড়া সম্প্রতি অনুমোদিত শ্রম আইন সংস্কার ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা জোরদার করার উদ্যোগকেও তিনি “উল্লেখযোগ্য সাফল্য” হিসেবে অভিহিত করেন।
মিলার বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইইউ নির্বাচন কমিশনের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে যাতে ভোট প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ হয়।
তিনি আসন্ন নির্বাচনকে “দেশের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের একটি সুযোগ” হিসেবে উল্লেখ করেন।
বৈঠকে দুই পক্ষ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও গভীর করার উপায় নিয়েও আলোচনা করেন। এর মধ্যে ছিল অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির সম্ভাবনা, বিমান ও নৌ পরিবহন খাতে নতুন সুযোগ, এবং মানবপাচার ও অবৈধ অভিবাসন রোধে যৌথ কার্যক্রমের বিষয়।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানান, বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া টার্মিনাল উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য বৈশ্বিক শিপিং জায়ান্ট এ.পি. মোলার–মার্স্কের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত মিলার জানান, ডেনমার্কের এই প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে লালদিয়াকে এ অঞ্চলের অন্যতম আধুনিক টার্মিনালে রূপ দিতে চায়।
দুই পক্ষ নির্বাচনী পরিবেশ, প্রার্থী যোগ্যতা ও মানবাধিকার সুরক্ষায় যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণের বিষয়েও একমত হন। মিলার শেষ পর্যন্ত জোর দিয়ে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের লক্ষ্যে সহায়তা করবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








