যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৯৩ ফিলিস্তিনি নিহত
ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণহানির সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৯৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৩২৪ জন।
কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গত ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ১৯ জনের মরদেহ স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে পৌঁছেছে। একই সময়ে আহত সাতজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
১৯ অক্টোবর, যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরে এক হামলায় দুই ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার পর ইসরায়েল পাল্টা বিমান হামলা চালায়। এতে অন্তত ২৬ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারান।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করে, তাদের হামলার লক্ষ্য ছিল হামাসের ফিল্ড কমান্ডার, সশস্ত্র যোদ্ধা, টানেল এবং অস্ত্র গুদাম। এই হামলাকে যুদ্ধবিরতির পরবর্তী সময়ের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সহিংসতা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পশ্চিম তীর সংযুক্তিকরণ বিল স্থগিতের নির্দেশ নেতানিয়াহুর
এর আগে ১৭ অক্টোবর গাজার জেতুন এলাকায় একটি ফিলিস্তিনি পরিবারের মাইক্রোবাসে ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলা আঘাত হানলে ওই পরিবারের ১১ সদস্য নিহত হন। যুদ্ধবিরতির পর এটিই ছিল একক হামলায় সর্বোচ্চ প্রাণহানির ঘটনা।
যুদ্ধবিরতির ১৫তম দিনে, অর্থাৎ ২৫ অক্টোবর শনিবার, গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এছাড়া, একই দিনে ইসরায়েলের নৌবাহিনী গাজা সিটির উপকূলে তিন ফিলিস্তিনি জেলের সব উপকরণ ধ্বংস করে তাদের গ্রেফতার করেছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা নিউজ।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর গাজায় ভয়াবহ সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। সেই সময় থেকেই ফিলিস্তিনি জেলেদের সাগরে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে অনেক জেলেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, কেউ কেউ আটক বা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাদের নৌযান জব্দ বা ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
মানবিক সংস্থা হিউম্যানিটি অ্যান্ড ইনক্লুশন-এর কর্মকর্তা নিক ওর জানিয়েছেন, গাজায় ধ্বংসের মাত্রা এত ভয়াবহ যে ধ্বংসস্তূপে পড়ে থাকা মারণাস্ত্রের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
তার মতে, এসব অপসারণে ২০ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলের দীর্ঘ দুই বছরের সামরিক অভিযানে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮ হাজার ৫১৯ জন, আর আহত হয়েছেন ১ লাখ ৭০ হাজার ৩৮২ জন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








