News Bangladesh

স্পোর্টস ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৫:৪৭, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

ব্যাটিং ব্যর্থতায় হারের পর তানজিম সাকিবের আক্ষেপ

ব্যাটিং ব্যর্থতায় হারের পর তানজিম সাকিবের আক্ষেপ

ছবি: সংগৃহীত

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ব্যাটিং ব্যর্থতায় প্রথম টি–টোয়েন্টিতে ১৬ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ১৬৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে লিটন দাসের দল। শেষ দিকে লোয়ার অর্ডারের লড়াই কিছুটা আশার সঞ্চার করলেও, স্বীকৃত ব্যাটারদের ব্যর্থতায় জয়ের সম্ভাবনা ম্লান হয়ে যায়। 

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে পেস বোলিং অলরাউন্ডার তানজিম হাসান সাকিব বলেন, যদি একজন থিতু ব্যাটার থাকত, ফলটা অন্যরকম হতো।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাট করে ৩ উইকেটে ১৬৫ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ার প্লেতেই ৪১ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। লিটন দাস, সাইফ হাসান, শামীম হোসেন পাটোয়ারী ও নুরুল হাসান সোহান সবাই ব্যর্থ হন এক অঙ্কের ঘরে।

১২ ওভারে ৭৭ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর শেষ স্বীকৃত ব্যাটার তাওহিদ হৃদয় (২৫ বলে ২৮) আউট হলে কার্যত হার নিশ্চিত হয়ে যায়। এরপর সপ্তম উইকেটে তানজিম হাসান সাকিব ও নাসুম আহমেদ ২৩ বলে ৪০ রানের জুটি গড়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। তানজিম খেলেন ২৭ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩৩ রানের লড়াকু ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ১৯.৪ ওভারে ১৪৯ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ, তিন বল বাকি থাকতেই ১৬ রানের পরাজয়।

শেষ উইকেটে তাসকিন আহমেদ ছক্কা হাঁকালেও, শটের পর পা দিয়ে স্টাম্প ভেঙে ম্যাচের ইতি টানেন।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তানজিম বলেন, শেষের দিকে শিশিরের কারণে বল ব্যাটে ভালোভাবে আসছিল। আমার মনে হয়, যদি একজন থিতু ব্যাটসম্যান থাকত, তাহলে ম্যাচটা অনেক সহজ হয়ে যেত। শেষ দুই ওভারে ৩০ রান দরকার ছিল—একজন সেট ব্যাটার থাকলে ম্যাচটা হাতের নাগালেই ছিল।

আরও পড়ুন: টাইগারদের ব্যাটিং ধস, উইন্ডিজ ১৬ রানে জয়

নিজের ইনিংস শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে না পারার আক্ষেপও ছিল তার কণ্ঠে, শেষ করতে পারলে খুব ভালো লাগত। আমি সেট ছিলাম, বল ব্যাটে ভালোভাবে আসছিল। নাসুম ভাইও ভালো সাপোর্ট দিচ্ছিলেন, বাউন্ডারি মারছিলেন। মনে হচ্ছিল, আমি এক ব্যাটসম্যানের সঙ্গে ব্যাট করছি। যদি আর কিছুক্ষণ থাকতে পারতাম, ম্যাচটা অন্যরকম হতে পারত।

তানজিমের মতে, ব্যাটিং ব্যর্থতার মূল কারণ পাওয়ার প্লেতে উইকেট হারানো ও মিডল অর্ডারের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা।

তিনি বলেন, আমরা পাওয়ার প্লেতে অনেক উইকেট হারিয়েছি। তারা যদি একটু সেট হয়ে আউট হতো, তাহলে চিত্রটা আলাদা হতো। মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা যদি ম্যাচটা গভীরে নিয়ে যেতে পারত, তাহলে গল্পটা ভিন্ন হতো।

বাংলাদেশ দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীনের ব্যাটিং পরামর্শ নিয়েও কথা বলেন তানজিম।

তিনি বলেন, ব্যাটিংয়ে সব সময় সালাহ উদ্দীন স্যার অনেক আত্মবিশ্বাস দেন। তিনি অনুশীলনের সময় অনেক ব্যাটিং করান। সেটাই আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। সতীর্থরা আমাকে এই ভরসা দেয় যে আমি রান করতে পারব।

বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা নিয়ে সমালোচনা নতুন নয়। সাম্প্রতিক ওয়ানডে সিরিজে মিরপুরের ধীর উইকেটে যেমন সমালোচনার ঝড় উঠেছিল, এবার তুলনামূলক ভালো উইকেটেও ব্যাটারদের দায়িত্বহীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রথম ছয় ব্যাটারের মধ্যে লিটন, সাইফ, শামীম, সোহান এক অঙ্কের ঘরে ফিরেছেন। তানজিদ হাসান তামিম (৫ বলে ১৫) আক্রমণাত্মক সূচনা করলেও সহজ উইকেট বিলিয়ে দেন। ফলে লোয়ার অর্ডারের ওপরই চাপ পড়ে ম্যাচ টেনে নেওয়ার।

তানজিম সাকিব ও নাসুম আহমেদের জুটি যখন কিছুটা আশা জাগায়, তখনই গ্যালারিতে উঠেছিল “সাকিব, সাকিব” স্লোগান—যা এক সময় শোনা যেত তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের নামে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে তানজিম বলেন, কানে এসেছে অবশ্যই। কিন্তু তখন আমি চাপের মুহূর্তে ছিলাম। কীভাবে পরের বল খেলব, কীভাবে স্কোরবোর্ডে সমীকরণটা মেলাব—সেটা নিয়েই ভাবছিলাম।

বয়সভিত্তিক দল থেকেই অলরাউন্ডার হিসেবে পরিচিত তানজিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও তার ব্যাটিং সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন। এ বছরের মে মাসে লাহোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩১ বলে ৫ ছক্কায় ৫০ রান করে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে ফিফটি তুলে নিয়েছিলেন তিনি।

চট্টগ্রামেও তার ব্যাটিং জ্বলে উঠেছিল, কিন্তু জয়ের গল্প লিখতে পারেননি।

তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টি বুধবার (২৯ অক্টোবর) একই মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। সিরিজে টিকে থাকতে হলে ম্যাচটি জেতা ছাড়া বিকল্প নেই বাংলাদেশের।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়