গোপালগঞ্জে গণঅধিকার পরিষদের ৫৯ নেতার পদত্যাগ

স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলে গোপালগঞ্জে গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) নবগঠিত জেলা কমিটির সভাপতি মো. আল আমিন সরদারসহ ৫৯ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলা শাখার পদত্যাগী সভাপতি মো. আল আমিন সরদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

এর আগে রবিবার (২৬ অক্টোবর) তিনি ও অন্যান্য পদত্যাগকারী সদস্যরা কেন্দ্রীয় কমিটির ই-মেইলে পৃথকভাবে পদত্যাগপত্র পাঠান।

গত শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় কমিটি গোপালগঞ্জ জেলা শাখার ৭৯ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করে। তবে কমিটি ঘোষণার পর থেকেই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। পদত্যাগী নেতাদের অভিযোগ, কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় দলের মূলনীতি, যোগ্যতা ও মাঠপর্যায়ের ত্যাগ-তিতিক্ষা কোনোভাবে বিবেচনা করা হয়নি। এতে দীর্ঘদিন ধরে পরিশ্রমী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। তারা উল্লেখ করেন, কমিটি গঠনে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা ও পক্ষপাতিত্ব প্রাধান্য পেয়েছে।

পদত্যাগপত্রে তারা উল্লেখ করেছেন, আমরা সবসময় দলের প্রতি অনুগত থেকেছি। কিন্তু যে কমিটিতে আস্থা, ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ অনুপস্থিত, সেখানে থেকে কোনো দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। তাই আমরা সম্মিলিতভাবে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে গণঅধিকার পরিষদের আদর্শ, নীতি ও গণমানুষের রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাসী।

আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সব ফার্মেসি বন্ধ ঘোষণা

পদত্যাগকারী সভাপতি মো. আল আমিন সরদার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, সদ্য ঘোষিত জেলা কমিটিতে সাবেক যুবলীগ ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে। এতে আমাদের দীর্ঘদিনের পরিশ্রমী ও নিবেদিত নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। ফলে কমিটিতে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। মূলত বিভাগীয় উপকমিটি স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে এই কমিটি গঠন করেছে।

তিনি আরও বলেন, ৭৯ সদস্যের কমিটিতে সাবেক যুবলীগ নেতা মহসিন শেখকে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি করা হয়েছে। এছাড়া টুঙ্গিপাড়া উপজেলা যুবলীগের এক সদস্য ও এনসিপি কর্মকাণ্ডে যুক্ত অন্যান্য নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে। এতে কমিটিতে থাকা নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। মনঃক্ষুণ্ন হয়ে আমরা ৫৯ সদস্য পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছি।

পদত্যাগী নেতাদের মধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম নাজমুল ইসলামসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ রয়েছেন। 

তাদের অভিযোগ, নতুন কমিটির সদস্যপদ বিতরণে পারদর্শিতা ও নীতিনিষ্ঠা উপেক্ষা করা হয়েছে। এতে দলের আদর্শ ও গণতান্ত্রিক চেতনার সঙ্গে বিরোধী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আমরা সবসময় দলের প্রতি অনুগত থেকেছি। কিন্তু যে কমিটিতে আস্থা ও ন্যায়বিচার নেই— সেখানে থেকে কোনো দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। তাই দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমরা সম্মিলিতভাবে আমাদের পদ থেকে পদত্যাগ করছি। তবে আমরা গণঅধিকার পরিষদের মূল আদর্শ, নীতি ও গণমানুষের রাজনীতিতে বিশ্বাসী।