News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৭:২৩, ২৯ মার্চ ২০১৫
আপডেট: ০৭:২৬, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

কী হয়েছিলো এরশাদকে বহনকারী বিমানে

কী হয়েছিলো এরশাদকে বহনকারী বিমানে

ঢাকা: সিঙ্গাপুর থেকে এরশাদসহ ২০৬ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসার পথে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ দুই দফায় যান্ত্রিক গোলযোগের সম্মুখীন হয়। যদিও পাইলটের বিচক্ষণতায় বড় দুর্ঘটনা এড়াতে সক্ষম হয় ফ্লাইটটি, কিন্তু আসলে কী সমস্যা হয়েছিলো ওই বিমানের? এ নিয়ে জনমনে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে।

গোলযোগের বিষয়ে বিমান কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানানো হয়, স্থানীয় সময় শনিবার বিকাল ৪টায় উড্ডয়নের পরপরই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এয়ারবাস এ ৩১০ মডেলের উড়োজাহাজটি আবারও সিঙ্গাপুরে অবতরণ করে। ত্রুটি সারানোর পর জাহাজটি সন্ধ্যায় রওনা হলেও ঢাকায় নামার আধাঘণ্টা আগে পাইলট ইঞ্জিনে আগুন লাগার সংকেত পান এবং জরুরি অবতরণের বার্তা পাঠান নিয়ন্ত্রণ কক্ষে। পরে বিমানটি স্বাভাবিকভাবেই নিরাপদে বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

এর আগে শনিবার বিকালে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দর থেকে উড়ার পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণের কথা ছিলো বিমানটির। ক্রুটি সারানোর পর জাহাজটি সন্ধ্যায় ঢাকার পথে রওনা হয়। কিন্তু ঢাকায় নামার আধা ঘণ্টা আগে পাইলট ২ নম্বর ইঞ্জিনে আগুন লাগার সংকেত পান।

এসময় পাইলট নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হিসেবে জেপসনিং পদ্ধতি অনুসরণ করেন। এই কায়দায় উড়োজাহাজে থাকা তেল কমিয়ে বাহনটিকে হাল্কা করা হয়। সে মোতাবেক উড়োজাহাজটির বেশ কিছু তেল ফেলে দেন পাইলট।

এদিকে জানা গেছে, শনিবারে এরশাদকে বহনকারী ওই উড়োজাহাজটিতে হাইড্রোলিক লিকেজও ধরা পড়ে। ফলে অবতরণের সময়ে বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার আটকে যাওয়ার সম্ভাবনাও ছিল। এক্ষেত্রে চাকা নামানো যায় না বলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অ্যারোনটিক বিশেষজ্ঞ নিউজবাংলাদেশকে জানান, এরকম সমস্যায় উড়োজাহাজকে হালকা করে ফেলতে হয়। তাই বিমান থেকে জেপসন পদ্ধতিতে তেল ফেলে দেয়া হয়। আর জেট ইঞ্জিনের এই তেল মাটিতে পড়ার সম্ভবনা কম। বিমান অনেক উচ্চতায় থাকলে তা বাতাসে তখনই বাষ্প হয়ে মিলিয়ে যায়।

তবে তারপরও পরিবেশে বিরূপ প্রভাবের আশংকায় খোলা আকাশে এভাবে তেল ছড়ানো এড়ানোর চেষ্টা করে থাকেন পাইলটরা। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার মতো অবস্থা হলে অর্থাৎ বিমানে আগুন ছড়িয়ে পড়ার মতো আশংকা থাকলে দ্রুত জেপসনিং করে বিমান অবতরণের ব্যবস্থা করা হয়।

তবে শনিবারের ঘটনায় আগুন লাগার ঘটনাকে অস্বীকার করা হয় বিমান কর্তৃপক্ষের বিবৃতিতে। কিন্তু উড়োজাহাজটি রানওয়েতে নামার সময় ধোঁয়া দেখা যায়। এসময় বিমানবন্দরের অগ্নিনির্বাপক দলকেও তৎপর দেখা গিয়েছিলো। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে বলেও জানানো হয় বিমান কর্তৃপক্ষের বিবৃতিতে।

উল্লেখ্য, যান্ত্রিক গোলযোগের সম্মুখীন হওয়া এয়ারবাস-৩১০ বিমানটির বয়স প্রায় ৩০ বছর। ১৯৯০ সালে  বাংলাদেশ বিমানের সঙ্গে যুক্ত হয় এয়ারবাস কোম্পানির এ বাহনটি। বিশ্বের কোনো বিমান পরিবহন সংস্থাই এখন আর এ মডেলের উড়োজাহাজে যাত্রী পরিবহন করে না বলে জানা গেছে।

এদিকে বিমান কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, মনিটরে ভুল সিগন্যালের কারণে পাইলট বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। ওই উড়োজাহাজটিতে আসলে কোনও সমস্যা হয়নি। তবে এ বছরের মধ্যেই পুরনো হয়ে যাওয়া এসব উড়োজাহাজ বদলে ফেলা হবে বলেও জানায় বিমান।  

নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএম/একে

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়