‘৩–৪ দিনের মধ্যে আসছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত’

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত সব রাজনৈতিক দল মেনে নেবে।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আইনগত সহায়তা প্রদান অধ্যাদেশ ২০২৫ খসড়ার সংশোধন প্রস্তাব নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান তিনি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, রাতারাতি সব সংস্কার শেষ করা সম্ভব নয়। বাস্তবে এত বড় ধরনের সংস্কার করা সহজসাধ্য নয়। ক্রমান্বয়ে সংস্কার করলে ভালো জায়গায় পৌঁছাতে পারব। 

তিনি আরও বলেন, সবাই মনে করেন সব সংস্কার এখনই করে ফেলতে হবে। বিষয়টা এত সহজ নয়। আমরা যখন অ্যাক্টিভিজম করেছি তখন ভেবেছিলাম কত সহজ, কিন্তু এখন বুঝতে পারছি কত কঠিন।

ড. আসিফ নজরুল সংবিধান ও সংস্কার প্রসঙ্গে বলেন, সব সংস্কার যেন সংবিধানে আটকে গেছে। অন্য কোনো সংস্কার কারো চোখেই পড়ে না। সংবিধান কোনো ম্যাজিক নয়, যে লিখে দিলেই সমাধান হয়ে যাবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি, জনগণের অভ্যাস বাদ না দিলে কোনো কিছু পরিবর্তন হবে না। 

আরও পড়ুন: আরও সাড়ে চার মাস ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতা প্রয়োগে সেনাবাহিনী

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, সংবিধানে তো লেখা আছে রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে প্রধান বিচারতি নিয়োগ দেবেন। কখনো কি হয়েছে?

বিচার বিভাগের সংস্কার সম্পর্কেও তিনি বিস্তারিত মন্তব্য করেন। তিনি জানান, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের দেওয়া ৭০–৮০ শতাংশ সংস্কার প্রস্তাব ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। 

তিনি দাবি করেন, অপপ্রচার করে বলা হয় কোথায় সংস্কার, কোথায় সংস্কার।

ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকারের প্রতি তিনি অনুরোধ জানান, আমাদের একটা ভীতি কাজ করে যে নির্বাচিত সরকার আসবে তারা সংস্কারগুলো ধরে রাখবে কি না। যারা আসবেন তাদের কাছে অনুরোধ, সংস্কারগুলো ধরে রাখবেন এবং আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।

সভায় তিনি আরও মন্তব্য করেন, সারা দেশে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হলে মামলা অর্ধেক কমে যাবে।

আইন উপদেষ্টা এই মতবিনিময় সভায় সরকারের ও জনগণের মধ্যে ধারাবাহিকতা এবং বাস্তবসম্মত সংস্কারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। 

তিনি অনুরোধ করেন, সংসদে অন্তর্ভুক্ত সংস্কারের ধারাকে শুধু নথিতে আটকে না রেখে বাস্তবায়ন ও সংরক্ষণে মনোনিবেশ করা হোক।