ত্রিপুরায় ৩ বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যা: তদন্তে বিএসএফ-বিজিবি
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে তিন বাংলাদেশি নাগরিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে। নিহতদের বাড়ি বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায়।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) দিবাগত রাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (৫৫ বিজিবি) সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
বিজিবির প্রাথমিক তথ্যমতে, নিহতরা হলেন চুনারুঘাট উপজেলার আলীনগর গ্রামের আশ্বব আলীর ছেলে জুয়েল মিয়া (৩২), বাসুল্লা গ্রামের কনা মিয়ার ছেলে পন্ডিত মিয়া (৪৫) এবং কবিলাশপুর গ্রামের কদ্দুস মিয়ার ছেলে সজল মিয়া (২০)।
৫৫ বিজিবি জানায়, দুই থেকে তিন দিন আগে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সীমান্তবর্তী বিদ্যাবিল এলাকা দিয়ে এই তিন বাংলাদেশি গোপনে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই থানার কারেঙ্গিছড়া এলাকায় প্রবেশ করেন। স্থানটি সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার ভারতের অভ্যন্তরে এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের ৭০ ব্যাটালিয়নের আওতাধীন এলাকায় অবস্থিত।
স্থানীয় সূত্র এবং বিজিবি জানায়, রাতের অন্ধকারে স্থানীয় ভারতীয় বাসিন্দারা ওই তিনজনকে গরু চোর সন্দেহে আটক করে সংঘবদ্ধভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। তাদের মরদেহ বর্তমানে ভারতের সাম্পাহার থানায় রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে ৫৬৭ দুর্ঘটনায় সড়কে নিহত ৫৬৫ জন
ত্রিপুরার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দৈনিক সংবাদ পত্রিকা-এর সাংবাদিক আশীষ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বুধবার সকালে খোয়াই জেলার বিদ্যাবিল এলাকায় পাহাড়ি আদিবাসীরা তিন বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে খোয়াই থানায় নিয়ে যায়।
চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তারেকুর রহমান বলেন, রাতে বিজিবি নিহতদের জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে ভারতের কাছে পাঠিয়েছে। সেখান থেকে পাঠানো লাশের ছবিতে জুয়েল, পন্ডিত ও সজলকে শতভাগ শনাক্ত করা গেছে।
হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (৫৫ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজিলুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। পতাকা বৈঠকের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঘটনার বিস্তারিত যাচাই, সত্যতা নিশ্চিতকরণ এবং সীমান্তের নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের কাজ বিজিবি অব্যাহত রেখেছে।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই থানাধীন কারেঙ্গিছড়া এলাকা। এটি সীমান্তের বিদ্যাবিল পয়েন্ট থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ভেতরে অবস্থিত। ঘটনাটি ঘটেছে বিএসএফের ৭০ ব্যাটালিয়নের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায়, যেখানে গরু চোর সন্দেহে বহিরাগতদের উপর হামলার একাধিক ঘটনার নজির রয়েছে।
বর্তমানে তিন বাংলাদেশির মরদেহ ভারতের সাম্পাহার থানায় রয়েছে। মরদেহ ফেরত আনার বিষয়ে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ চলছে বলে নিশ্চিত করেছে ৫৫ বিজিবি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








