News Bangladesh

আইন-আদালত ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:০০, ৩০ জুলাই ২০২৫
আপডেট: ১১:০০, ৩০ জুলাই ২০২৫

৫ আগস্ট দুপুরে বুঝতে পারি, হাসিনার পতন হবে: চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি মামুনের

৫ আগস্ট দুপুরে বুঝতে পারি, হাসিনার পতন হবে: চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি মামুনের

ছবি: সংগৃহীত

২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম এবং ২০২৫ সালের ‘জুলাই আন্দোলন’ দমন নিয়ে মুখ খুলেছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী মামুন। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চলতি বছরের ২৪ মার্চ দেওয়া পাঁচ পৃষ্ঠার জবানবন্দিতে বলেছেন, “৫ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যেই আমি বুঝতে পারি শেখ হাসিনার সরকার আর ক্ষমতায় থাকবে না।”

চৌধুরী মামুন জানান, ৪ আগস্ট বেলা ১১টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে নিরাপত্তা-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক হয়। এতে আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আন্দোলনের বিস্তার নিয়ে আলোচনা হলেও, সরকার পতনের আশঙ্কা বা রাজনৈতিক সমাধান নিয়ে কোনো কথা হয়নি।

তিনি দাবি করেন, তিনি এবং কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সরকারের দুর্বলতা তুলে ধরতে চাইলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি।

সেই রাতেই আরেকটি জরুরি বৈঠক হয়, যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, মন্ত্রিসভার সদস্য, সেনা ও র‍্যাব কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ৫ আগস্টের সম্ভাব্য গণজমায়েত মোকাবেলায় কৌশল নির্ধারণ করা হয়।

রাত সাড়ে ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর অপারেশন কন্ট্রোল রুমে আরেকটি বৈঠকে ঢাকার প্রবেশপথে কঠোর অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু ৫ আগস্ট সকাল থেকে লক্ষাধিক মানুষ রাজধানীতে ঢুকতে শুরু করে। পুলিশ বাধা দিলেও সেনাবাহিনী তা করেনি। বরং মাঠপর্যায়ের অনেক সেনাসদস্য আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন বলে জানান মামুন।

তিনি বলেন, “দুপুরের মধ্যে ঢাকার রাস্তায় লাখো মানুষের ঢল নামে। তখন পিএমও থেকে নির্দেশ আসে জনস্রোত ঠেকাতে। আমি তখনই বুঝে যাই—সরকার টিকবে না।”

চৌধুরী মামুন জানান, দুপুর ১টার মধ্যে বিশেষ শাখার (এসবি) মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা ছাড়বেন। তবে শেখ হাসিনা ভারত যাবেন কি না, সে বিষয়ে সেনাবাহিনী কিছু জানায়নি।

আরও পড়ুন: ৫ আগস্ট বন্ধ থাকবে আদালত

৫ আগস্ট বিকেলে তিনি হেলিকপ্টারে করে সেনাবাহিনীর অফিসার্স মেসে আশ্রয় নেন।

জবানবন্দির শেষ অংশে তিনি বলেন, “সরকারের নির্দেশে এবং কিছু অতিউৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে বলপ্রয়োগ, নির্বিচার গুলি ও গ্রেপ্তার চালিয়ে জনআন্দোলন দমন করা হয়েছে। এতে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। একজন সাবেক পুলিশ প্রধান হিসেবে আমি লজ্জিত, অনুতপ্ত এবং জনগণের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।”
 

নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়