News Bangladesh

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৪:২১, ১৯ জুন ২০২৫
আপডেট: ১৫:৫২, ১৯ জুন ২০২৫

ইরানে হামলার পরিকল্পনায় চূড়ান্ত অনুমতি দেননি ট্রাম্প

ইরানে হামলার পরিকল্পনায় চূড়ান্ত অনুমতি দেননি ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ইরানে হামলার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন। তবে দেশটিতে হামলা চালানো হবে কিনা তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

ইরানে সম্ভাব্য হামলার প্রশ্নে ট্রাম্প বুধবার বলেছিলেন, “আমি করতেও পারি, নাও পারি।”

সেদিনই ট্রাম্পকে ভর্ৎসনা করে ভিডিওবার্তায় খামেনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো সামরিক হস্তক্ষেপের চড়া মূল্য গুনতে হবে।”

শীর্ষ এক গোয়েন্দার বরাতে সিবিএস লিখেছে, ইরানকে তার পরমাণু কর্মসূচি থেকে সরে আসার সুযোগ দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আপাতত হামলা থেকে বিরত রয়েছেন। ফরদোতে ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পে ট্রাম্প হামলার কথা বিবেচনা করছেন বলে খবর এসেছে।

নিজের ‘ধৈর্যের সীমা’ ফুরিয়ে এসেছে জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট শর্তহীন আত্মসমর্পণের যে আহ্বান জানিয়েছেন, তা প্রত্যাখান করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।

তিনি এও বলেন, “ইরানি জাতি কখনও আত্মসমর্পণ করে না।”

খামেনির এই প্রত্যাখ্যানকে তাচ্ছিল্য করে ট্রাম্প বলেন, “শুভ কামনা।” তবে তিনি নিজের পরিকল্পনা প্রকাশ করেননি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি কী করতে যাচ্ছি তা কেউই জানে না।”

আর নিতে পারছেন না মন্তব্য করে তিনি ‘শর্তহীন আত্মসমর্পণের’ আহ্বান জানান।

ট্রাম্পের হামলার পরিকল্পনা অনুমোদনের খবর প্রথম প্রকাশ করে ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’।

বিবিসি লিখেছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু স্থাপনায় হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। তার জবাবে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কথা জানিয়েছে ইরান।তবে ইসরায়েলে গুরুতর কোনো ক্ষতির খবর শোনা যায়নি।

আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলার সপ্তম দিনে ইরানে নিহত ৬৩৯

ইসরায়েল শুক্রবার হামলা শুরু করার পর প্রথমবারের মতো বুধবার খামেনির বক্তব্য এসেছে।

ট্রাম্পকে উপহাস করে জাতিসংঘে ইরানের মিশন এক্স পোস্টে লিখেছে, “ইরান কখনো চাপের মুখে আলোচনা করে না, শান্তি গ্রহণ করে না এবং নিশ্চিতভাবেই এমন এক যুদ্ধবাজের সঙ্গে নয় যে কিনা প্রাসঙ্গিক থাকার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েছে।”

এতে বলা হয়, “কোনো ইরানি কর্মকর্তা কখনও হোয়াইট হাউজের গেইটে গিয়ে মাথা নত করার আবেদন জানায়নি। তার মিথ্যাচারের চেয়েও বেশি ঘৃণ্য হল ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে ‘খতম’ করার তার কাপুরুষোচিত হুমকি।”

বিবিসি লিখেছে, এই কথার লড়াই চলার মধ্যে রাজধানী তেহরান থেকে মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন। এক কোটি জনসংখ্যার শহরটি থেকে বের হওয়া মানুষের চাপে সড়কে জট তৈরি হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বুধবার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের হুমকি নিরসনে তার দেশের বাহিনী ‘ধাপে ধাপে অগ্রসর হচ্ছে’।

তিনি বলেন, “আমরা তেহরানের আকাশ নিয়ন্ত্রণ করছি। আমরা আয়াতুল্লাহর শাসনব্যবস্থার ওপর প্রচণ্ড শক্তি দিয়ে আঘাত হানছি। পারমাণবিক স্থাপনা, ক্ষেপণাস্ত্র, সদর দপ্তর ও শাসনব্যবস্থার প্রতীকগুলো নিশানা করে আমরা আঘাত করছি।”

ট্রাম্পের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সেনেট কমিটিকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের যে কোনো নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য পেন্টাগন প্রস্তুত।

মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকান সেনা মোতায়েনের পর তিনি এ মন্তব্য করেন। উড়োজাহাজবাহী ইউএসএস নিমিৎজ রণতরী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে পারস্য উপসাগরে অবস্থানরত ইউএসএস কার্ল ভিনসন নেতৃত্বাধীন আক্রমণকারী দলে যোগ দিতে যাচ্ছে।

ফ্লাইট ট্র্যাকারে রিফুয়েলিং ট্যাংকারসহ বিভিন্ন আকাশ শক্তি এবং এফ-২২ ও এফ-২৩ জঙ্গি বিমান ইউরোপে স্থানান্তরর করতে দেখা গেছে।

বিবিসি জানতে পেরেছে, ইরানের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র ডিয়েগো গার্সিয়া বা সাইপ্রাসের ব্রিটিশ সামরিক ঘাঁটি ব্যবহারের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করেনি।

সাধারণত এমন আক্রমণাত্মক অভিযানের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র দেশকে আগাম খবর দেয়। এক ব্রিটিশ সূত্র বলেছে, ওয়াশিংটনের কাছে ‘সব ধরনের বিকল্প’ বিবেচনায় রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ চিত্র এখনো স্পষ্ট নয়।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলেছে, এই আক্রমণের জবাব দিতে গিয়ে ইরান এখন পর্যন্ত চারশর মত ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, যাতে ২৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।

এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এক সতর্কবার্তায় একটি ‘অপ্রাসঙ্গিক’ ভিডিও ক্লিপকে উপেক্ষা করতে বলেছে। ওই ভিডিওতে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। ধারণা করা হচ্ছে, টেলিভিশনের স্যাটেলাইট ফিড হ্যাক করা হয়েছিল।

রাষ্ট্রীয় টিভি বলেছে, “আপনি যদি টিভি দেখার সময় অপ্রাসঙ্গিক বার্তা দেখে থাকেন, তাহলে বুঝে নিতে হবে শত্রুপক্ষ স্যাটেলাইট সংকেতের ওপর হস্তক্ষেপ করছে।”

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়