কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন এবং মানবিকতাকে উপজীব্য করে নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ এবার অংশ নিচ্ছে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে অনুষ্ঠিতব্য “কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল”-এর পঞ্চম আসরে। আগামী ১ নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত চলবে সাত দিনব্যাপী এই উৎসব। উৎসবে মিশর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান এবং ভারতের চলচ্চিত্রের সঙ্গে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে প্রদর্শিত হবে ছবিটি।

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ চলচ্চিত্রটি দর্শক ও সমালোচকদের ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের উপন্যাস “বেদনার বালুচরে” অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্রের সংলাপ ও চিত্রনাট্য রচনা করেছেন মাসুম রেজা, এবং পরিচালনা করেছেন সোহেল রানা বয়াতি।

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশিস খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান এবং শিশু শিল্পী ঊষশী।

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চলচ্চিত্রটির দৃশ্য ধারণ করেছেন চিত্রগ্রাহক কমল চন্দ্র দাস।

আরও পড়ুন: সম্পর্ক মানে নিয়ন্ত্রণ নয়, বোঝাপড়া ও বন্ধুত্ব: মিথিলা

চলচ্চিত্রটির সঙ্গীতায়োজনেও রয়েছে বৈচিত্র্য। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, আমি যখন গল্পটি লিখি তখন এত চিন্তা করে লিখিনি, কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালবাসা পাচ্ছি তা অকল্পনীয়। বিভিন্ন উৎসবে অংশগ্রহণ করছে, ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের মূল দর্শন তুলে ধরছে ‘নয়া মানুষ’।

পরিচালক সোহেল রানা বয়াতি বলেন, আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করছে, এটা খুবই আনন্দের বিষয়। এই উৎসবে বাংলাদেশের একমাত্র ছবি হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করছে ‘নয়া মানুষ’। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের চলচ্চিত্র ধীরে ধীরে মানুষের অন্তরে স্থান করে নিবে।

‘নয়া মানুষ’ শুধু একটি চলচ্চিত্র নয়, এটি বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষের জীবন, বিশ্বাস ও মানবিকতার এক অনন্য দলিল। আন্তর্জাতিক মঞ্চে এর এই অংশগ্রহণ বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য এক গৌরবের বিষয় এবং বিশ্বমঞ্চে দেশীয় গল্পের শক্তিশালী উপস্থাপন।