কুষ্টিয়ায় মা-বাবার কবরে চিরনিদ্রায় ফরিদা পারভীন

ছবি: সংগৃহীত
লোকসংগীতের বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীনকে কুষ্টিয়ায় মা-বাবার কবরেই চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় পৌর গোরস্তানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে রাত ৮টা ২৩ মিনিটে মরদেহ পৌঁছালে ভক্ত, শিল্পী, স্বজন ও স্থানীয়দের শোকে গোরস্তান এলাকায় হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান লালন সম্রাজ্ঞী খ্যাত ফরিদা পারভীন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্বামী ও চার সন্তান রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুর খবরে সংগীতাঙ্গনসহ সর্বস্তরের মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। সকালে তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হলে সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে মরদেহ কুষ্টিয়ায় নিয়ে আসা হয়।
ফরিদা পারভীন দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতা ও ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। চলতি বছরে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাকে। সর্বশেষ ২ সেপ্টেম্বর গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হলে তাকে আইসিইউ ও পরে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
বাংলাদেশে লালন সংগীতকে জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে ফরিদা পারভীন ছিলেন অগ্রণী। নজরুলসংগীত ও আধুনিক গান দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও জীবনের বড় অংশ তিনি উৎসর্গ করেছেন লালনের গান গাওয়ায়। দেশ-বিদেশে লালনের দর্শন ছড়িয়ে দিতে তার কণ্ঠ অনন্য ভূমিকা রাখে। জাপান, সুইডেন, ডেনমার্ক, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ নানা দেশে তিনি লালনের গান পরিবেশন করেছেন।
আরও পড়ুন: ফরিদা পারভীনের শেষ শ্রদ্ধা শহীদ মিনারে, দাফন কুষ্টিয়ায়
১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। বাবার চাকরির সুবাদে কুষ্টিয়ায় বড় হন তিনি। ১৯৬৮ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে সংগীতজীবন শুরু করেন এবং গানে গানে কাটিয়ে দেন ৫৫ বছর।
সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ১৯৮৭ সালে একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ২০০৮ সালে ফুকুওয়াকা এশীয় সাংস্কৃতিক পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা লাভ করেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি